যশোরে বোমা হামলা-টার্গেট- সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।


rafiq প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ২৮, ২০১৯, ০৪:৫৭ / ২০৬
যশোরে বোমা হামলা-টার্গেট- সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

বিশেষ সংবাদ ————————–যশোরে সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতাদের বাসভবন এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ ছয়টি স্থানে ককটেল হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। গত শনিবার রাত আড়াইটার দিকে পরপর এই ককটেল হামলা করা হয়েছে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বিস্ফোরিত ককটেলের আলামত উদ্ধার করেছে।

যশোর কোতয়ালি থানার ওসি অপূর্ব হাসান জানিয়েছেন, শনিবার রাত আড়াইটার দিকে যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের বাসভবনে ককটেল হামলা হয়েছে। এরপর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন চাকলাদের মালিকাধীন পাঁচ তারকামানের হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনালে ককটেল বিস্ফোরিত হয়। এর আগে শাহীন চাকলাদারের চাচাতো ভাই তৌহিদ চাকলাদার ফন্টুর বাসভবনে ককটেল হামলা করা হয়। এরপর চাকলাদার ফিলিং স্টেশনে ককটেল হামলার খবর পান তারা। এর আগে শহর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইমাম হাসান লাল ও যুবলীগ নেতা রাবিবুল হাসানের বাসভবনে বোমা হামলা হয়েছে। প্রত্যেক স্থান থেকে দুটি করে ১২টি ককটেলের কৌটা ও আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি বলেন, এটা আওয়ামী লীগের দুইপক্ষের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের। অপরদিকে র্যাব-৬ যশোর ক্যাম্পের সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্ত শুরু করেছেন।

জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মঈনুদ্দিন মিঠু বলেন, মধ্যরাতে কে বা কারা ককটেলগুলোর বিস্ফোরণ ঘটায়। রাতে সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ যশোরের বাসায়ই ছিলেন। তবে বিস্ফোরণে কারো কোনো ক্ষতি হয়নি। মঈনুদ্দিন মিঠু রাজনীতিতে কাজী নাবিল অনুসারী হিসেবে পরিচিত। তিনি বলেন, এরআগে গত ২৫ জানুয়ারি রাতে জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি সৈয়দ মুনির হোসেন টগরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকার বাসভবন এবং যুবলীগ নেতা রাজিবুল আলমের বাড়িতে সন্ত্রাসীরা একই কায়দায় কয়েকটি ককটেল ছুঁড়ে মারে। সন্ত্রাসীরা রাজিবুলের বাড়িতে গুলিও করে। যদিও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি

এমপি কাজী নাবিল আহমেদের অনুসারী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথ বলেন, কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।

ছাত্রলীগ যশোর জেলা শাখার সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমানে যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম জুয়েল বলেন, অতিউত্সাহী সন্ত্রাসীরা নিজেদের অবস্থান জানান দিতে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তিনি বলেন, তৌহিদ চাকলাদার ফন্টুর বাসায় বোমা হামলার ভিডিও ফুটেজ আমি দেখেছি। ফুটেজ দেখলে বোঝা যাবে কারা এই ঘটনায় যুক্ত। একটিপক্ষের সন্ত্রাসীরা ভাগবাটোয়ারায় এগিয়ে থাকার লক্ষ্য নিয়ে এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন শাহীন চাকলাদারের অনুসারী নেতা হিসেবে পরিচিত জুয়েল।

কোতয়ালী থানার ওসি অপূর্ব হাসান আরো বলেন, এটি তাদের (আওয়ামী লীগের) অভ্যন্তরীণ কোন্দলের বিষয়। ব্যক্তিগত শক্তি প্রদর্শনের জন্য নিজেদের স্থাপনার উপর ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তারা জনগণ ও প্রশাসনকে অস্তিত্বের জানান দিচ্ছে।

এদিকে তৌহিদ চাকলাদার ফন্টুর বাসভবনে বোমা হামলার প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও শ্রমিক লীগের একাংশ গতকাল রবিবার দুপুর ১২টায় বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের গাড়িখানার জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে বের হয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে শেষ হয়। সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ হাসান বিপু, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল প্রমুখ।

জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ হাসান বিপু জানান, স্থানীয় সংসদ সদস্যের অনুসারী সন্ত্রাসী ম্যানসেল, ডিম রিপনরা এসব হামলার সাথে জড়িত। সন্ত্রাসীরা একযোগে আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িতে বোমা হামলা করেছে। শান্ত শহরকে অশান্ত করার পরিকল্পনা হিসেবে তারা এই হামলা করে। ব্যালেন্স করতে স্থানীয় সংসদ সদস্যের বাড়িতে ককটেল ফাটানো হয়েছে। পুরো ঘটনাটি পরিকল্পিত।

অপরদিকে এমপি কাজী নাবিল আহমেদের বাসভবনসহ জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বাসভবনে ককটেল হামলার প্রতিবাদে গতকাল বিকালে জেলা পরিষদ মিলনায়তন চত্বর থেকে শহর আওয়ামী লীগ ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি শহর প্রদক্ষিণ করে দড়াটানায় শেষ হয়। সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথ ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান মিন্টু, শহর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইমাম হাসান লাল প্রমুখ। বক্তারা বলেন, যারা এই ককটেল হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের জনসম্মুখে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, যাতে আর কেউ ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটাতে না পারে

সূত্র দৈনিকইত্তেফা,

ব্রেকিং নিউজ :
Shares