সন্ত্রাস যে করবে তাকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিন ভিডিও কনফারেন্সে ৫ জেলায় নির্বাচনী জনসভায় প্রধানমন্ত্রী


rafiq প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ২৮, ২০১৮, ০০:৪৪ / ২২৭
সন্ত্রাস যে করবে তাকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিন ভিডিও কনফারেন্সে ৫ জেলায় নির্বাচনী জনসভায় প্রধানমন্ত্রী

রফিক চৌধুরী————————–আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, আগামী ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিএনপির পরাজয় হবে- এটা তারা বুঝতে পেরেছে। তাই নির্বাচনের আগে তারা নাশকতা করতে পারে। তারা যেনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে না পারে সেজন্য সবার সতর্ক থাকতে হবে। ভোটের দিনে কেউ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে এলে তাকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দিতে তিনি সকালের প্রতি আহ্বান জানান।প্রচারের শেষ দিন গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ সুধাসদন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে টাঙ্গাইল, কুমিল্লা, যশোর, পাবনা ও পঞ্চগড়ে পৃথক ৫টি বিশাল নির্বাচনী জনসভায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের নিজ নিজ এলাকায় চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা নিরাপদে থাকবেন। কারণ ইতোমধ্যে বিএনপি-জামায়াত মিলে ১ ডিসেম্বর থেকে ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের পাঁচজন নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে এবং ৪৪১ জন আহত হয়েছে। আওয়ামী লীগের ১৭০টা অফিস-বাড়িঘর তারা ভাঙচুর করেছে, ৫৪টা স্থানে বোমা হামলা করেছে। পেট্রোল বোমা হামলাও চালানো হয়েছে। ৬৮টি স্থাপনা ও যানবাহনে তারা হামলা করেছে। পুলিশের ওপরও তারা হামলা করেছে। তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জোটের এই চরিত্রটা বদলাতে হবে। কারণ এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের মানুষ কখনো পছন্দ করে না। কখনো পছন্দ করবে না।’ শেখ হাসিনা বলেন, সারাদেশে সকলকে অত্যন্ত সজাগ থাকতে হবে। এই ধরনের সন্ত্রাসী কাজ যদি কেউ করতে আসে, তাহলে সাথে সাথে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার হাতে তাদের তুলে দিতে হবে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঠেকাতে আওয়ামী লীগের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকারও আহ্বান জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ শান্তি চায়। আসন্ন নির্বাচনটাও শান্তিপূর্ণ হবে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে এবং সবার অংশগ্রহণে এই নির্বাচন অর্থবহ হবে।’ স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির বিজয়ী হওয়ার আশা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আশা করি ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বাংলার জনগণ নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আবার একটি বিজয় নিয়ে আসবে। জনগণ নৌকা মার্কায় ভোট দেবে এবং আমরা আবার বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করব।’ গত দশ বছরে আওয়ামী লীগের শাসনামলে দেশের বিদ্যুত্ খাতের উন্নয়ন, দারিদ্র্যের হার কমানো, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, সারাদেশে ডিজিটাল সুবিধা বিস্তৃত করা, প্রতিটি উপজেলায় সরকারি স্কুল স্থাপন, মিনি স্টেডিয়াম স্থাপনসহ নানা উন্নয়নের চিত্র এ সময় তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। আগামীতে ক্ষমতায় এলে ঘরে ঘরে বিদ্যুত্ পৌঁছে দেওয়া ও দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করার ঘোষণা দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সরকারের ধারাবাহিকতা থাকলে উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয় এবং তার সুফলটা মানুষ পায়।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের সময় জঙ্গি দমনে সফলতার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশকে জঙ্গি-সন্ত্রাস, মাদক দূর করে মানুষের জীবনে শান্তি-নিরাপত্তা দিতে চাই। দুর্নীতির বিরুদ্ধে যে অভিযান শুরু হয়েছে সেটা অব্যাহত থাকবে। দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ আমরা গড়তে চাই।’

যশোর অফিস জানায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বিকালে যশোর টাউন হল ময়দানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় সভা জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় ভাষণ দেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী যশোর-১ (শার্শা) আসনের প্রার্থী শেখ আফিল উদ্দীন, যশোর-২ (চৌগাছা-ঝিকরগাছা) আসনের মেজর জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ডা. মো. নাসির উদ্দীন, যশোর-৩ (সদর) আসনের কাজী নাবিল আহমেদ, যশোর-৪ (অভয়নগর-বাঘারপাড়া উপজেলা ও বসুন্দিয়া ইউনিয়ন) আসনের রণজিত্ কুমার রায়, যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনের স্বপন ভট্টাচার্য্য এবং যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনে নৌকার প্রার্থী ইসমাত আরা সাদেককে পরিচয় করিয়ে দেন এবং তাদের ভোট দানের জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। প্রার্থী ছাড়াও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য্য, যশোর-২ আসনের সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলাম মনির, সাবেক সচিব নজরুল ইসলাম খান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল, পৌর মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টুসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

ব্রেকিং নিউজ :
Shares