প্রধানমন্ত্রীর চা-চক্রের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান ঐক্যফ্রন্টের ৬ ফেব্রুয়ারি সংলাপ ডেকেছে বিএনপি-ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বাতিলের এজেন্ডা থাকলে সংলাপ হতে পারে :ফখরুল


rafiq প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ২৭, ২০১৯, ০৬:২৫ / ২৫৭
প্রধানমন্ত্রীর চা-চক্রের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান ঐক্যফ্রন্টের ৬ ফেব্রুয়ারি সংলাপ ডেকেছে বিএনপি-ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বাতিলের এজেন্ডা থাকলে সংলাপ হতে পারে :ফখরুল

বিশেষ বার্তা প্রেরক ———-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোট নেতাদের সঙ্গে নির্বাচন-উত্তর শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। তিনি আগামী ২ ফেব্রুয়ার বেলা সাড়ে তিনটায় গণভবনে চা-চক্রে আমন্ত্রন জানিয়েছেন ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের। তাদেরকে দাওয়াত পত্র পাঠনো হয়েছে। ঐক্যফ্রন্ট ছাড়াও গতকাল বাম গণতান্ত্রিক জোটের আটটি দলের ১৬ জন নেতা আমন্ত্রণ পেয়েছেন। তাদেরকেও ২ ফেব্রুয়ারি সাড়ে তিনটায় চা চক্র ও শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা জানিয়েছেন,তারা প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে যাচ্ছেন না। তবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিলের এজেন্ডা থাকলে আমরা সংলাপে যাবো,না হলে যাবো না। এটাই ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপির সিদ্ধান্ত। ভোট ডাকাতির নির্বাচনে বিজয়ীকে শুভেচ্ছা জানাতে কেনো যাবো?

ঐক্যফ্রন্টের শরিক গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, ২ ফেব্রুয়ারি শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বিকেলে গণভবন থেকে শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য চা-চক্রের আমন্ত্রণ পেয়েছি, কিন্তু এতে যাওয়ার সুযোগ নেই। সুব্রত চৌধুরী বলেন, আমরা একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ নিয়ে সংলাপের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। ওই নির্বাচন ছিল প্রহসনের নির্বাচন। আমরা তাই এটা নিয়ে সংলাপের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু এখন শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য ডাকা হয়েছে। আমরা সেখানে যাচ্ছি না

ঐক্যফ্রন্টের আহবায়ক ড. কামাল হোসেন চিকিত্সার জন্য সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। আজ রবিবার তাঁর দেশে ফেরার কথা আছে। ঐক্যফ্রন্ট সূত্র বলছে, ড. কামাল দেশে ফেরার পর এই আমন্ত্রণের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা হবে।

প্রধানমন্ত্রীর চা-য়ের নিমন্ত্রন প্রাপ্ত দল বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুল্লাহ আল ক্বাফী ওরফে ক্বাফী রতন জানান, সেখানে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। এই ভুয়া নির্বাচনকে স্বাগত জানাতে যাব না। তবে আজ বাম জোটের বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে।

জানাগেছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপে অংশ নেওয়া দল ও জোটের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। ওই সময় বিভিন্ন দল ও জোটের নেতাদের সঙ্গে সংলাপ করেন প্রধানমন্ত্রী। ওই সংলাপে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলের নেতাদের আলাদা আলাদা চিঠি দিয়ে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে।

গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রতিনিধি দল গত ১ নভেম্বর গণভবনে সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সংলাপে বসেছিলেন। এর ৭ দিন পর ৭ নভেম্বর ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে দ্বিতীয দফায় সংলাপে বসেন। পরে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের ভরাডুবি হয়। নির্বাচনের পরে একপর্যায়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ১৩ জানুয়ারি বলেন, আবারও সংলাপে বসবেন প্রধানমন্ত্রী। কাদের বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে যেসব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ হয়েছিল, তাদের আবার আমন্ত্রণ জানাবেন প্রধানমন্ত্রী। অবশ্য এর একদিন পরেই কাদের বলেন, নির্বাচন নিয়ে সংলাপ নয়, রাজনৈতিক দলগুলোকে শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য ডাকা হবে। তবে কাদেরের বক্তব্যের পরদিন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও একটি সংলাপ করবেন।

এদিকে নির্বাচন নিয়ে মতামত গ্রহনের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংলাপ হবে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি।

জেএসডি সভাপতি ও ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা আ স ম আবদুর রব বলেন, ২৮ জানুয়ারি আমাদের সংলাপ হওয়ার কথা ছিল। সেই সংলাপ এখন আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি হতে পারে।

সংলাপে কাদের ডাকা হবে জানতে চাইলে গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন, ভোটারবিহীন নির্বাচন, যেটা জাতিকে হতবাক করে দিয়েছে। এই নির্বাচনের বিরুদ্ধে সর্বস্তরের মানুষ যারা আছেন, যারা মত প্রকাশ করবেন। যারা অবাধ, সুষ্ঠুুনিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য পথ খুঁজে দেবেন, তারা এই সংলাপে অংশ নেবেন।

জামায়াতে ইসলামী ইস্যুতে ঐক্যফ্রন্টে কোনো বিভেদ তৈরি হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘এখন তাঁদের কাছে জামায়াত ইস্যু প্রাধান্য পাচ্ছে না এবং আলোচ্য বিষয়ও না। ৩০ডিসেম্বরের ভোট আগের রাতে হয়ে যাওয়াই আমাদের কাছে মুখ্য। আমাদের সঙ্গে জামায়াত ছিল না এবং সংলাপেও থাকবে না।’

ডা.জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন,আমরা এই মুহূর্তে অন্য কোনো কর্মসূচি নিয়ে ভাবছি না। আগামী ৬ ফেব্রয়ারি সংলাপ নিয়ে আমরা ভাবছি। এই সংলাপটা কীভাবে সাফল্যমন্ডিত করা যায়, সেটাই ।

ব্রেকিং নিউজ :
Shares