দোষ স্বিকার করে নিষিদ্ধ হলেন সাকিব, ভক্তদের ক্ষোভ।


rafiq প্রকাশের সময় : অক্টোবর ৩০, ২০১৯, ০৫:১৪ / ৬৮৯
দোষ স্বিকার করে নিষিদ্ধ হলেন সাকিব, ভক্তদের ক্ষোভ।

বিডি সংবাদ একাত্তর ডেস্ক  এক বছরের স্থগিত নিষেধাজ্ঞাসহ দুই বছরের জন্য সব রকমের ক্রিকেটীয় কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে বাংলাদেশ টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে। আইসিসির দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছে সাকিব এই সাজা মেনেও নিয়েছেন। অপরাধ এবং শাস্তি দুটোই মেনে নেয়ায় শাস্তির বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ থাকছে না সাকিবের।

  • তিন বার জুয়াড়িদের কাছ থেকে ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব পেলেও আইসিসির দুর্নীতি দমন কমিশনকে (আকসু) না জানানোয় এই সাজা পেলেন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট তারকা।

    গতকাল সন্ধ্যায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সাকিবকে এই সাজা দেওয়ার কথা জানায় আইসিসি। ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা উল্লেখ করে ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত চার মাসের মধ্যে তিন বার সাকিবের কাছে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব আসে। কোনোবারই এ বিষয়ে আইসিসি কিংবা আকসুকে কিছু জানাননি এই অলরাউন্ডার।

    এরমধ্যে আছে ২০১৮ সালের বাংলাদেশ, জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার ত্রিদেশীয় সিরিজে দুইবার ও একই বছর আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও কিংস এলিভেন পাঞ্জাব ম্যাচে একবার।

    এই শাস্তির ফলে ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত কোনো ধরনের ক্রিকেটে মাঠে নামতে পারবেন না বাংলাদেশের এই অলরাউন্ডার। প্রথম এক বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটানোর সময়ে নতুন করে কোনো আইন না ভাঙলে পরবর্তী এক বছরের শাস্তি থেকে তিনি রেহাই পাবেন। এর অর্থ হল, আগামী বছর অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলতে পারবেন না সাকিব।

    আইসিসির অ্যান্টি করাপশন কোডের আর্টিকেল ২.৪.৪ ধারা অমান্য করায় এ শাস্তি এসে পড়লো সাকিবের কাঁধে। আইসিসির কাছ থেকে এই শাস্তি ঘোষণার পর দু:খপ্রকাশ করেছেন দেশসেরা এই ক্রিকেটার, ‘নিষিদ্ধ হওয়ার কারণে আমি খুবই মর্মাহত। ক্রিকেট এমন একটা খেলা যা আমি পছন্দ করি। নিজের সর্বোচ্চ উজাড় করে দিয়ে খেলেছি। তবে আমার দায়িত্ব ছিল আইসিসির কাছে বিষয়টি অবহিত করা। আমি তা করতে পারিনি।’ ভবিষ্যতে তরুণ খেলোয়াড়রা যেন এমন ভুল না করে সেজন্য আকসুর সঙ্গে সচেতনতামূলক কাজে অংশগ্রহন করতে চান সাকিব, ‘ক্রিকেটের ভক্ত বিশ্বজুড়েই। ক্রিকেট দুর্নীতিমুক্ত করার স্বার্থে আকসুর সঙ্গে কাজ করতে চাই। আমি যেই ভুল করেছি, তরুণ ক্রিকেটাররা যেন সেই ভুল না করে তাই সচেতনতামূলক কর্মকান্ডে অংশগ্রহন করতে চাই।’

    আইসিসির জেনারেল ম্যানেজার অ্যালেক্স মার্শাল বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাকিব একজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। ইতিপূর্বে তিনি আইসিসির বেশকিছু শিক্ষামূলক প্রোগ্রামে অংশগ্রহন করেছেন। আইসিসির ধারা সম্পর্কে তার অবগত থাকার থাকা উচিত ছিল। সাকিব তদন্তে সহায়তা করায় আমরা খুশি। তিনি তরুণ খেলোয়াড়দের এই ভুল থেকে শিক্ষা নেয়াও আহ্বানও জানিয়েছেন।’

    আইসিসির দুর্নীতি দমন আইনে, কোন ক্রিকেটার যদি জুয়াড়ির কাছ থেকে ম্যাচ পাতানোর বা স্পট ফিক্সিং এর প্রস্তাব পান তাহলে দ্রুতই তা আকসুর কর্মকর্তাদের জানাতে নয়। না জানালে সেট শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়। যার সাজা ছয় মাস থেকে পাঁচ বছর।

    টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ দল ভারত সফরে যাবে আজ। এই সফর দিয়ে পরে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপেও শুরু হবে বাংলাদেশের পথচলা। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ সফরের আগে মাঠের ক্রিকেট নিয়ে আলোচনা হচ্ছে সামান্যই। এমনকি আগামী ৩ নভেম্বর থেকে দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে (সাবেক ফিরোজ শাহ কোটলা) প্রথম ম্যাচকে সামনে রেখে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি দল ঘোষণা করেও বদল আনতে হয়েছে এই এক কারণে। কেননা আগের ঘোষিত দলের অনুশীলনে সাকিবের অনুপস্থিতি দেখে ডালপালা মেলছিল নানা গুঞ্জন।

    ক্রিকেটারদের ধর্মঘট শেষ হওয়ার পর গত শুক্রবার থেকে শুরু হয় ভারত সফরের জন্য বাংলাদেশ দলের প্রস্তুতি। কিন্তু অনুশীলনের প্রথম দিনই ছিলেন না অধিনায়ক। তার না থাকা নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানাচ্ছিলও না বিসিবি। পরে জানা যায়, অসুস্থতার জন্য কোচের কাছ থেকে ছুটি নিয়েছেন সাকিব। পরদিন তিনি অনুশীলনে যোগ দেন।
    রবি ও সোমবার ক্রিকেটাররা নিজেদের মধ্যে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেললেও সাকিব একটিও খেলেননি। তাতে নতুন করে মাথাচাড়া দেয় অনেক প্রশ্ন। বিসিবি এবারও স্পষ্ট করছিল না কোনো কিছু। পরে সোমবার রাতে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খান জানান, ভারত সফরের জন্য পরিবর্তিত টি-টোয়েন্টি দল জানানো হবে মঙ্গলবার। তাতে গুঞ্জনগুলো শক্ত ভিত পায় আরও। সেই দলে টি-২০ অধিনায়ক হিসেবে নাম রয়েছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের। আর এখনও ঘোষনা না হলেও সাকিবের নিষেধাজ্ঞায় টেস্ট দলপতির আর্মব্যান্ড পেতে যাচ্ছেন মুমিনুল হক।

ব্রেকিং নিউজ :
Shares