বিএনপি এখন কোন পথে ? সংসদে না আন্দোলনে?


rafiq প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ৩১, ২০১৮, ২৩:৩১ / ২১০
বিএনপি এখন কোন পথে ? সংসদে না আন্দোলনে?

রফিক চৌধুরী ————————-একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বেসরকারিভাবে ঘোষিত ফলাফলে দলীয়ভাবে মাত্র ৫টি এবং জোটগত মিলিয়ে সর্বসাকুল্যে ৭টি আসন পেয়ে স্তম্ভিত বিএনপি। কারান্তরীণ দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও লন্ডনে অবস্থানরত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অবর্তমানে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গড়ে ভোটে গিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখা দলটি এখন সংকটের মুখে। ভোটের ফলাফলে মনোবল হারিয়ে দল- জোটের নেতা-কর্মীরা অনেকটা দিশাহারা। এই অবস্থায় করণীয় নিয়ে গতকাল সোমবার প্রথমে বিএনপির স্থায়ী কমিটি, এরপর ২০ দল এবং শেষে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বৈঠক করেছে।

এসব বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপি মহাসচিব ও ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একাদশ সংসদ নির্বাচন বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। একইসঙ্গে অবিলম্বে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে পুনঃনির্বাচন ও সরকারের পদত্যাগ দাবি করে তিনি বলেছেন, দাবি আদায়ে আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি দ্রুতই আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়ার চিন্তা করছেন তারা।

আর গতকাল সন্ধ্যায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেছেন, রবিবারের নির্বাচন বাতিল করে পুণঃতফসিলের দাবিতে আগামী ৩ জানুয়ারি ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরাসহ সকল বিরোধী দলের প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশনে স্মারকলিপি প্রদান করবেন এবং কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

বিএনপির বিজয়ীরা শপথও নেবেন না, সংসদেও যাবেন না

গতকাল বিকালে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে প্রথমে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে মির্জা ফখরুল এক প্রশ্নের জবাবে জানান, রবিবারের ভোটে বিএনপির নির্বাচিত পাঁচজন সংসদ সদস্য হিসেবে শপথও নেবেন না, সংসদেও যাবেন না। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা তো একাদশ নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছি। নতুন নির্বাচনের দাবি করেছি। ফলে সংসদে যোগ দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।’

উল্লেখ্য, রবিবারের ভোটে বেসরকারি ফলাফলে বিএনপির যেই পাঁচজন নির্বাচিত হয়েছেন তারা হলেন- মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (বগুড়া-৬), মোশাররফ হোসেন (বগুড়া-৪), মো. আমিনুল ইসলাম (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২), মো. হারুন উর রশিদ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩) এবং জাহিদুর রহমান জাহিদ (ঠাকুরগাঁও-৩)। এছাড়া ড. কামালের গণফোরামের পুরনো জোট জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনুসর মৌলভীবাজার-২ আসনে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে এবং গণফোরামের মোকাব্বির খান দলীয় প্রতীক ‘উদীয়মান সূর্য’ মার্কায় সিলেট-২ আসনে জয়লাভ করেছেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল নিজসহ দলের জয়ী পাঁচজন শপথও নেবেন না এবং সংসদেও যাবেন না বললেও জোটের সুলতান মনসুর ও মোকাব্বিরের বিষয়ে কিছু বলেননি।

প্রসঙ্গত, সংবিধানের ৬৭(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ভোটে জয়ী হয়ে যদি কেউ সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ না নেন তাহলে নতুন সংসদের প্রথম অধিবেশনের প্রথমদিন থেকে ৯০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর তার আসনটি শূন্য হবে। অবশ্য সংশ্লিষ্ট বিজয়ী ব্যক্তি স্পিকারকে অবহিত করে শপথ গ্রহণে কিংবা অধিবেশনে যোগদানে বিরত থাকলে সেক্ষেত্রে স্পিকার সিদ্ধান্ত নেবেন।

হেরেছে বাংলাদেশ, কবর রচিত হয়েছে গণতন্ত্রের: ড. কামাল

গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর মতিঝিলে ড. কামালের চেম্বারে বৈঠক করেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতারা। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল বলেন, ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনের নামে যে প্রহসনমূলক নাটক মঞ্চস্থ হল, তা সমগ্র দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছেন এবং তা হাড়ে-হাড়ে উপলব্ধি করেছেন। একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে কীভাবে ধ্বংস করতে হয়েছে, তা এদেশের মানুষসহ সমগ্র বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দিয়েছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ এবং তাদের আজ্ঞাবহ প্রধান নির্বাচন কমিশনার। এই কথিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় সরকারকে বিজয়ী দেখালেও প্রকারান্তরে হেরেছে বাংলাদেশ ও তার ১৭ কোটি মানুষ। এর মধ্য দিয়ে কবর রচিত হয়েছে আমাদের বহু আকাঙ্ক্ষিত গণতন্ত্রের। তিনি বলেন, সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কথিত নির্বাচনের ফলাফল ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও অশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে।

পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে পরিকল্পিত নির্বাচন: ফখরুল

বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে একাদশ সংসদ নির্বাচন পরবর্তী আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে পরিকল্পিত একটি নির্বাচন করা হয়েছে। ফল আগেই সাজিয়ে রাখা হয়েছিল। ভোটের আগের রাতেই ব্যালটে সিল মেরে বাক্স ভরে রাখা হয়। একটা পরিকল্পিত ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ভোট এটা। আমরা নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের দাবি জানাই। আমরা এই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করছি এবং অবিলম্বে নির্দলীয় সরকারের অধীনে পুনরায় নির্বাচন দিতে হবে।

তিনি বলেন, বিচারবিভাগ থেকে শুরু করে প্রশাসন, সমস্ত ল অ্যান্ড অর্ডার যারা দেখেন, গোয়েন্দাদের যোগসাজশে নজিরবিহীন এই নির্বাচন করা হয়েছে। অতীতে কখনও এমন নির্বাচন দেখিনি। নির্বাচনের আগে থেকে ত্রাস সৃষ্টি করা হয়েছে। জাতির ইতিহাসে সবেচেয়ে কলঙ্কময় নির্বাচন। গত নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ২০১৪ সালের নিবাচন বর্জনের যে সিদ্ধান্ত বেগম খালেদা জিয়া দিয়েছিলেন, তা সঠিক ছিল, এবারের এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তা প্রমাণিত হলো।

মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনে যে বিদেশি পর্যবেক্ষক ছিলেন তাদের আমরা কেউ চিনি না। বিদেশি কোনও অবজারভার ছিল কিনা আমাদের জানা নেই। এগুলো আইওয়াশ। ভারতের কেউ ছিল না কিনা, তাও জানি না। এসময় পাশে থাকা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘তারা স্পন্সর, সূত্র ইত্তেফাক,

ব্রেকিং নিউজ :
Shares