ছাত্রলীগের কর্মসূচীতে যোগ না দেওয়াই তিন পরিক্ষার্থীকে হল থেকে বের করে দিলেন এক ভাই অন্য ভাই তুলে নিলেন।


rafiq প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ৮, ২০১৮, ২২:৪০ / ৩৬৩
ছাত্রলীগের কর্মসূচীতে যোগ না দেওয়াই তিন পরিক্ষার্থীকে হল থেকে বের করে দিলেন এক ভাই অন্য ভাই  তুলে নিলেন।

 

নির্দেশ অনুযায়ী কাজ না করায়’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আবাসিক হল থেকে ছাত্রলীগের তিন কর্মীকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সংগঠনটির দুজন সিনিয়র নেতার বিরুদ্ধে। জানা গেছে গত শুক্রবার দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহনেওয়াজ ভবনে এ ঘটনা ঘটে৷ হলছাড়া হওয়া তিন কর্মী হলেন, ইমরান হাসান, আশিক মিয়া ও মেহেদী হাসান৷ তিনজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র এবং চারুকলা অনুষদ শাখা ছাত্রলীগ কমিটির সদস্য৷ অভিযুক্ত দুই সিনিয়র নেতা হলেন, চারুকলা অনুষদ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি খালিদ হাসান রবিন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিদায়ী কমিটির গণযোগাযোগ ও উন্নয়ন বিষয়ক উপসম্পাদক আদম আব্দুল্লাহ জিম৷

পরে রোববার দিবাগত রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের সহায়তায় ইমরান হাসান, আশিক মিয়া ও মেহেদী হাসান হলে ওঠেন৷

হলছাড়া হয়ে ফের হলে ফিরে আসা ইমরান হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের তৃতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা চলছে৷ গত বৃহস্পতিবার ভাইয়েরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণার গ্রাফিতি আঁকার কাজে যেতে বলেছিলেন৷ আমরা বলেছি, আমাদের গ্রাফিক ডিজাইনের কম্পিউটার নির্ভর কিছু কাজ আছে, সেগুলো করতে হবে, তাই যেতে পারছি না৷ এ কথা বলায় তাঁরা আমাদের গালিগালাজ করেন৷ পরে শুক্রবার রাতে জিম ভাই এসে আমাদের গালিগালাজ করে হল থেকে বের হয়ে যেতে বলেন৷ আমরা অনেক অনুনয়-বিনয় করলে তিনি চলে যান৷ এরপর ওই দিনই রাতে রুমে আসেন চারুকলা অনুষদ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রবিন ভাই৷ তিনি গালিগালাজ করে জামার কলার ও ঘাড় ধরে টেনে আমাদের রুম থেকে বের করে দেন৷ আমাদের জুতা পরার সুযোগও তিনি দেননি৷ রোববার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম ভাইয়ের সহায়তায় হলে উঠেছি৷’

জানতে চাইলে ওই তিন ছাত্রকে হল থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আদম আব্দুল্লাহ জিম৷ তিনি বলেন, ‘ওদেরকে এখনো হল থেকে বের করা হয়নি, তবে বের করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছাত্রলীগের সবাই মিলে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ঘটনার বিষয়ে অবহিত আছেন৷’
কেন হল থেকে বের করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘চারুকলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ক্যাম্পাসে গ্রাফিতি আঁকার কাজ চলছে৷ ওরা তিনজন পলিটিক্যাল সিটে থাকে৷ সবাইকে গ্রাফিতি আঁকার জন্য যেতে বলা হয়েছিল৷ ওরা বিভিন্ন ধরনের কারণ দেখায়৷ কাজ ছিল চার দিনের ওরা তিন দিন বিভাগের সাবমিশনের কথা বলে গ্রাফিতি আঁকার কাজে আসেনি৷ চতুর্থ দিন তাঁদের বলা হয়, তোমাদের সাবমিশন তো শেষ, আজকে এসো যাতে আমরা দ্রুত কাজ শেষ করতে পারি৷ ওরা আসেনি৷ ওদের অনেকবার ফোন করা হয়৷ পরে এক সিনিয়র ভাই ওদের রুমে গেলে ওরা তাঁর সঙ্গে বাজে আচরণ করে৷ এ জন্য শুক্রবার রাতে তাঁদের একটু ধমক-টমক দেওয়া হয়েছিল৷’

শাহনেওয়াজ ভবনের ওয়ার্ডেন মো. আবদুস সাত্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুক্রবার নাকি এমন একটা ঘটনা ঘটেছে৷ আমি পরে শুনেছি৷ আমার কাছে কোনো ছাত্র এখনো অভিযোগ করেননি৷ অভিযোগ এলে ঠিকই ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী জানান, এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এমন কোনো অভিযোগ আসেনি৷

অভিযুক্ত রবিন ও জিম দুজনই ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত৷ গোলাম রাব্বানীকে মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি৷এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘ঘটনা জানার পরই আমি উদ্যোগ নিয়ে তাঁদের হলে ওঠার ব্যবস্থা করে দিয়েছি৷ চারুকলা অনুষদ শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিষয়টি অবগত নন৷ সাবেক এক ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে৷ সে ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে ঘটনাটা ঘটিয়েছে৷ হল প্রশাসনকে আমরা বলেছি, সেখানে যেন কোনো বহিরাগত বা সাবেক ছাত্রনেতা অবস্থান করতে না দেয়

ব্রেকিং নিউজ :
Shares