স্মৃতি ও আবেগের পাতায় চন্দ্রঘোনা আদর্শ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়-নুরুল আবছার চৌধুরী।


rafiq প্রকাশের সময় : এপ্রিল ৫, ২০২০, ০০:১৪ / ২৮৬
স্মৃতি ও আবেগের পাতায় চন্দ্রঘোনা আদর্শ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়-নুরুল আবছার চৌধুরী।

বিশেষ রিপোর্ট বিডি সংবাদ একাত্তর————-স্মৃতি ও আবেগের পাতায় চন্দ্রঘোনা আদর্শ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়

নুরুল আবছার চৌধুরী : আশির দশক। তখন আমি চন্দ্রঘোনা আদর্শ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত। তৎসময়ে রাংগুনিয়ার কয়েকটি স্কুলের মধ্যে চন্দ্রঘোনা স্কুল অন্যতম। ব্যাপক চাঞ্চল্যে অসীম উদ্দীপনাপূর্ণ অবয়বে দারুণ সাফল্যে শিক্ষা বিস্তারে তখন চন্দ্রঘোনা হাই স্কুল আদর্শের ধ্বজাধারী হিসেবে প্রতিপাদিত। দিকে দিকে তখন প্রাণের স্কুলের সুনাম। এই স্কুলের ছাত্র হিসেবে তখন পুলক অনুভব করতাম। শিক্ষকদের পাঠদানে মনোনিয়োগে নিজেকে সচেতন রাখতাম।

যতটুকই স্মৃতিতে খুজে পাই এই বিদ্যালয়কে ঘিরে তার সবটুকুই প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর আনন্দময় জীবনের অংশবিশেষই বটে। আমার বাবা তাঁর সমকালীন সময়ের একজন আলোচিত ব্যক্তিত্ব। তাঁর সময়কালে তিনি তাঁর সাধ্যের সবটুকু দিয়েই সমাজে কাজ করা চেষ্টা করে গেছেন। যদিও বর্তমান সময়ে আমার বাবাকে নিয়ে অনেক সমালোচনাও আছে।

তবে প্রাণের চন্দ্রঘোনা হাই স্কুলের প্রতিষ্ঠাকালীন বিজ্ঞান শিক্ষক প্রয়াত সুব্রত বড়ুয়ার কাছে শুনেছিলাম যে কয়জন মহৎপ্রাণ ব্যক্তিত্ব চন্দ্রঘোনা হাই স্কুল প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রেখেছেন তার মধ্যে আমার বাবার ভূমিকাও ছিল অন্যতম । তাঁর কাছেই শুনেছিলাম মরহুম হাফেজ আহম্মদ চৌধুরীর বদৌলতে পাওয়া বিজ্ঞানাগারের প্রায় ইনস্ট্রুমেন্টস দিয়েই এখনো বিজ্ঞান( পদার্থ বিজ্ঞান) ব্যবহারিক ক্লাস হয়ে থাকে। আরো অনেক কথা।

সেদিক থেকে চন্দ্রঘোনা আদর্শ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় আমার আবেগের ঠিকানাও। আমার ছাত্রাবস্থা থেকে আজ পর্যন্ত কয়েক দশক পেরিয়ে চন্দ্রঘোনা হাই স্কুলের বয়স পঞ্চাশের ঘর পেরোলো। পড়াশোনার মান ঠিক রেখে নব্বইয়ের দশকে অবকাঠামোগত কিছু উন্নয়ন হলেও একবিংশ শতাব্দীর শুরুর দশকের মাঝামাঝি থেকেই চন্দ্রঘোনা হাই স্কুলের ক্রমাগত অবনতির গল্প শুনে আবেগতাড়িত হয়েই আজকের এই লেখা।

চন্দ্রঘোনা হাই স্কুলে বিশেষ করে গত দশকের অস্বাভাবিকতায় আমার মন বেজায় ব্যথিত, অতিশয় ক্ষুব্ধ। ঘর থেকে বেরোলেই শুনতে পাই চন্দ্রঘোনা হাই স্কুলে ব্যাপক দুর্নীতির গল্প, স্কুলের অর্থ তসরুফের উদ্ভট কেচ্ছা।

দু ‘তিন বছর আগে এলাকার কিছু শিক্ষিত যুবকের প্রচেষ্টায় গঠিত প্রাক্তন শিক্ষার্থী পরিষদে আমার সংস্রব হেতু স্কুলের বিষয়াদি আমার জ্ঞাতব্যে আরো বেশি স্পট। গেলো মাসে এলাকার নেতৃত্বস্থানীয় কিছু যুবকের দাবির প্রেক্ষিতে চাউর হওয়া দুর্নীতির চ্যালেঞ্জ হিসেবে স্কুল কর্তৃপক্ষ যাবতীয় হিসাবের জন্য অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পরিচালনা পর্ষদের কয়েক সদস্য নিয়ে একটি আন্তঃ অডিট কমিটি গঠন করে বিগত পাঁচ বছরের হিসাব দেখা শুরু করে।

হিসাবের নয়ছয় দেখে অডিট কমিটিই বিস্ময় প্রকাশ করে। হিসাবের বরাতে জানতে পেরেছি গেলো পাঁচ বছরে স্কুল ফান্ডের প্রায়( উল্লেখ্য বিগত বছর গুলোতে স্কুলের মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা গড়ে ১০৫০জন) ২৭ লক্ষ টাকা তসরুপ হয়েছে যা কোনমতে সুখের সংবাদ তো নই মেনে নেয়ার মতোও না। গর্হিত দুর্নীতির এই মহাযজ্ঞে উৎফুল্ল উটকো ফাউল লোকদের বাঁচাতে কেউ কেউ নাকি নানান টালবাহানার ফন্দি আঁকছে শুনে কাতর মনে দাবি নিয়েই বলি কোন প্রকার টালবাহানা যাতে না হয়, স্কুল ফান্ডের টাকা তসরুপে জড়িত দুর্নীতিবাজদের কাছ থেকে তসরুপ হওয়া যাবতীয় অর্থ উদ্ধার করে জড়িতদের বিরুদ্ধে তড়িৎ শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এহেন দুর্নীতির সাথে জড়িতদের প্রতি হৃদয় নিংড়ে ঘৃণা জানাই।

করোনার এই মহামারী থেকে আল্লাহ সবাইকে হেফাজত করুন.. আমিন।

নিবেদক
নুরুল আবছার চৌধুরী সহ-সভাপতি
রাঙ্গুনিয়া প্রেসক্লাব

ব্রেকিং নিউজ :
Shares