৪৪ বছর কারাভোগ শেষে মুক্তি পাওয়া জল্লাদ শাহজাহান ভূঁইয়া মারা গেছেন।
রফিক চৌধুরী বিডি সংবাদ একাত্তর ঃগতকাল সোমবার ভোর ৫টা ৩০ মিনিটে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। ডিএমপির তেজগাঁও জোনের শেরে-বাংলা নগর থানার এসআই মশিউর আজম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, সাভারের হেমায়েতপুরের জাদুরচর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন শাহজাহান। গত রোববার গভীর রাতে হঠাৎ বুকে ব্যথা শুরু হলে তাকে ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।এস আই মশিউর আরও জানান, শাহজাহানের বোন ফিরোজা বেগম হাসপাতাল থেকে লাশ গ্রহণ করেন। আইনগত কার্যক্রম শেষে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ইছাখালী গ্রামে তাকে দাফন করা হবে।
কারা নথি অনুযায়ী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছয় ঘাতক বজলুল হুদা, মুহিউদ্দিন, সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, মহিউদ্দিন আহমেদ, আবদুল মাজেদ, চার যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লা, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, মীর কাসেম আলী, কুখ্যাত সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদার, জঙ্গি নেতা বাংলা ভাই ও আতাউর রহমান সানী, শারমীন রীমা হত্যার আসামি খুকু মনির ও ডেইজি হত্যা মামলার আসামি হাসানসহ আলোচিত ২৬ আসামির ফাঁসি কার্যকর করেন।
১৯৫০ সালের ২৬ মার্চ নরসিংদীর পলাশ উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের ইছাখালী গ্রামে জন্ম জল্লাদ শাহজাহানের। ব্যক্তিগত জীবনে ছিলেন অবিবাহিত। তবে, মুক্তির পর এক তরুণীকে বিয়ে করে আইনি জটিলতায় পড়েন।
১৯৯১ সালের ১৭ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার হয়ে মানিকগঞ্জ জেলা কারাগারে যান। দোষী সাব্যস্ত হয়ে ডাকাতি করতে গিয়ে হত্যা ও অস্ত্র আইনের দুই মামলায় তার ৪২ বছরের কারাদণ্ড হয়। সাজা কমাতে জল্লাদ হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। সহযোগী হিসেবে গফরগাঁওয়ের নূরুল ইসলামকে ফাঁসি দিয়ে জল্লাদ জীবন শুরু। একসময় মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয় শাহজাহানকে। সেখানে প্রধান জল্লাদ করা হয়।
জল্লাদের কাজ, সুশৃঙ্খল জীবনযাপন এবং ভালো কাজের পুরস্কার হিসেবে ১০ বছর ৫ মাস ২৮ দিন রেয়াত (সাজা মওকুফ) পান। মুক্তির সময় ওই দুই মামলায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা পরিশোধ করে দেয় কারা কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘ ৩১ বছর ৬ মাস দুদিন কারাভোগের পর গত বছর ১৮ জুন মুক্তি পান।
আপনার মতামত লিখুন :