জসিম মাহমুদ———–
গত ১০ বছরে সেনাবাহিনীর সক্ষমতা বহুলাংশে বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি মো.আবদুল হামিদ।
শনিবার (০৮ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের ভাটিয়ারিতে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির (বিএমএ) প্যারেড গ্রাউন্ডে রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএমএ’র ৭৬ তম দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের অফিসার ক্যাডেটদের কমিশন প্রাপ্তি উপলক্ষে এই কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, গত ১০ বছরে সেনাবাহিনীর অবকাঠামোগত পরিবর্তনের পাশাপাশি সক্ষমতা বহুলাংশে বেড়েছে। ফোর্সেস গোল-২০৩০ এর অংশ হিসেবে সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নসহ শক্তিশালী প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সমরাস্ত্র ও সরঞ্জাম সংগ্রহ করা হয়েছে। আজকের বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অবকাঠামোগত, কৌশলগত এবং প্রযুক্তিগত দিক থেকে এক দশক আগের সেনাবাহিনীর চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা। আধুনিক প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জামাদি সমন্বয়ে অনেক বেশি উন্নত, দক্ষ ও চৌকস।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিশ্বে নিজেদের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করবে বলে আশা করছেন রাষ্ট্রপতি।
নবীন ক্যাডেটদের অভিনন্দন জানিয়ে তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমরা এদেশের সন্তান, জনগণের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তোমাদের মানুষের সুখ-দু:খ ও হাসি-কান্নার সমান অংশীদার হতে হবে। যেকোনো দুর্যোগ-দু:সময়ে বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।
স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সর্বদা সজাগ থাকার জন্য নবীন ক্যাডেটদের প্রতি আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।
এছাড়া মায়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন, সুশৃঙ্খলভাবে ত্রাণ বিতরণ ও পরিচয়পত্র তৈরিতে সেনাবাহিনীর ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন রাষ্ট্রপতি।
তিনি বলেন, দেশ-বিদেশে দায়িত্ব পালনে দক্ষতা ও পেশাদারিত্ব দেখিয়ে ইতোমধ্যে আমাদের সেনাবাহিনী সব মহলের প্রশংসা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের মানুষ শান্তি আর সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে জানবে- এটিই জাতির প্রত্যাশা।
এর আগে রাষ্ট্রপতি প্যারেড গ্রাউন্ডে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন এবং অভিবাদন গ্রহণ করেন।
‘রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজের’ মাধ্যমে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির ৭৬ তম দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের ২৫৪ জন বাংলাদেশি, ২ জন সৌদি এবং ১ জন শ্রীলঙ্কান ক্যাডেটসহ মোট ২৫৭ জন ক্যাডেট কমিশন লাভ করেছেন। বাংলাদেশি ক্যাডেটদের মধ্যে ২১৭ জন পুরুষ ও ৩৭ জন নারী।
এদের মধ্যে ব্যাটালিয়ন সিনিয়র আন্ডার অফিসার এ কে এম ইনজামামুল হক সেরা চৌকস ক্যাডেট বিবেচিত হয়েছেন এবং ‘সোর্ড অব অনার’ পেয়েছেন। কোম্পানি সিনিয়র আন্ডার অফিসার ইবনে ইজাজ হাসান সামরিক বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্বের জন্য ‘সেনাবাহিনী প্রধান স্বর্ণপদক’ পেয়েছেন।
কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ ও বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাতসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া মন্ত্রীপরিষদের কয়েকজন সদস্য, সংসদ সদস্য, চট্টগ্রামের মেয়রসহ রাজনীতকরা উপস্থিত থেকে কুচকাওয়াজ প্রত্যক্ষ করেন।
আপনার মতামত লিখুন :