সারা দেশে স্মরণ ও শ্রদ্ধায় মহান ‘বিজয় দিবস’ উদযাপিত।


rafiq প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ১৭, ২০১৯, ০৯:৫০ / ১৮১
সারা দেশে স্মরণ ও শ্রদ্ধায় মহান ‘বিজয় দিবস’ উদযাপিত।

বিডি সংবাদ একাত্তর ডেস্ক  উন্নয়নের মহাসড়কে দেশ। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে। গতকাল বিজয় দিবসে আরো এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ়তার মধ্য দিয়েই জাতি স্মরণ করেছে বীর শহীদদের। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের বিভাগীয় শহর, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন সর্বত্রই ছিল মানুষের মধ্যে বিজয় দিবসের উৎসবের আমেজ। ৯ মাস যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই দিনে এসেছিল আমাদের আকাক্সিক্ষত স্বাধীনতা। বিশ্ব মানচিত্রে জায়গা করে নেয় নতুন সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশ। বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশিদের এনে দেয় আত্মপরিচয়ের ঠিকানা। সবশ্রেণী পেশার মানুষের কাছে গতকালের দিনটি ছিল কবিতার ‘আজ আমাদের খুশির দিন’ এর মতোই।

মুক্তিযুদ্ধে যারা স্বজন হারিয়েছেন, তারাও হারানো বেদনার মধ্যেই আনন্দে-উদ্বেল হন। দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। বাংলাদেশিরা বীরের জাতি। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা এনেছেন জাতি তাদের স্মরণ করে নানাভাবে। কেউ বেদিতে ফুল দিয়ে, কেউ বাসায়-মসজিদে মিলাদ মাহফিল ও মোনাজাত করে, কেউ দর্শনীয় স্পটে ঘুরে, কেউ স্মৃতিসৌধ, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজরিত বেদিতে ফুল দিয়ে সময় কাটিয়ে শহীদের স্মরণ করেন। তবে সবার মধ্যে ছিল এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয়। সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিতে আসা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা আরো এগিয়ে যাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, তলাবিহীন ঝুড়ির অপবাদ কাটিয়ে দেশ এখন অর্থনৈতিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দেশকে আরো এগিয়ে নিতে হবে। অর্থনৈতিক উন্নতির পাশাপাশি মানুষের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও আইনের শাসনের দিকে জোড় দিতে হবে। তবে সব দলের নেতাই দেশের আরো উন্নতি, নতুন প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য ভূমি এবং তরুণদের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

বিজয় দিবসে সব পথ মিশে গিয়েছিল সভার স্মৃতিসৌধের দিকে। যাদের বুকের তাজা রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা এসেছে; সেইসব শহীদদের শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় স্মরণ করা হয়। সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধের বেদিতে ফুল দিয়ে দিনের প্রথম প্রহরে জাতির বীর সন্তানদের স্মরণ করেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অতঃপর হাজারো রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, সমাজসেবি, কূটনৈতিকসহ বিশিষ্টজনেরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এরপরই স্মৃতিসৌধের মূল ফটক সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। এ সময় শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান লাখো মানুষ। চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, সিলেটসহ বিভাগীয় শহর, জেলা শহর, উপজেলা শহর সর্বত্রই ছিল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধার একই দৃশ্য। শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানায় আমজনতা।

এবারের বিজয় দিবস যেন দীর্ঘ এক সকাল নিয়ে এসেছিল। আগের সন্ধ্যের পর যান্ত্রিক ঢাকা শহরে যেন রাত নামেনি। লাল-সবুজের স্বাধীন স্পর্ধায় মলিন ছিলো রাতের আঁধার। রাজধানী ঢাকার প্রত্যেকটি আকাশচুম্বী ভবন হয়ে উঠেছিলো এক একটি লাল সবুজের বাংলাদেশ। আলোকসজ্জার প্রতিফলন যেন শিশির ঘেরা তিমির বিদায়ী বিজয়ী ভোরের আলো হয়ে নামে রাজধানী ঢাকার অলিগলির পরতে পরতে। শীতের সকালের সোনা রোদ যখন চিকচিক করতে থাকে নাগরিক দালানের কার্নিশে কার্নিশে, তখন রাজপথ যেন পরিণত হয়ে যায় বিজয়ের মিছিলে।

১৭ কোটি বাংলাদেশির জন্য এই দিন সত্যিই আনন্দের ও উদযাপনের। সেই সঙ্গে দেশপ্রেমী হৃদয়ে ৯ মাসে প্রাণ দেয়া স্বাধীনতাকামী লড়াকু আবাল-বৃদ্ধ-বণিতাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করার দিন। বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্যারেড ময়দানে বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ ছিল সত্যিই উপভোগ্য। সারা দেশের শত শত স্পটে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নাটক, আলোচনা সভায় ছিল দর্শকদের উপচেপড়া ভিড়।

বিজয় দিবসে ঢাকা শহরের প্রত্যেক সরকারি দফতর এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান উত্তোলন করা হয় জাতীয় পতাকা। বাদ যায়নি বিপণিবিতানসহ আবাসিক দালানগুলোও। সেইসঙ্গে নগরীর সব ধরণের পরিবহনে উড়তে দেখা গেছে লাল সবুজের নিশান। এমনকি রিকশায় জাতীয় পতাকা টানিয়ে অনেক রিকশাচালককে বিজয়ের গান গাইতে গাইতে রিকশা চালাতে দেখা যায় ঢাকার রাজপথে।

 

ব্রেকিং নিউজ :
Shares