চট্টগ্রামে বি,এন,পির মহা সমাবেশ মহা সৈমুদ্রে পরিনত-সরকার পতনের মাধ্যমেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি।


rafiq প্রকাশের সময় : জুলাই ২১, ২০১৯, ০৪:৪৯ / ২২৫
চট্টগ্রামে বি,এন,পির মহা সমাবেশ মহা সৈমুদ্রে পরিনত-সরকার পতনের মাধ্যমেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি।

বিডি সংবাদ একাত্তর  ডেস্ক দলের নেতাকর্মীদের গণমানুষের কাছে ছুটে যেতে হবে। গণঐক্য সৃষ্টি করে এ জালিম সরকারের পতন ঘটাতে হবে। সরকার পতনের মাধ্যমেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং দেশে গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। সরকার ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় এসেছে। তাই দেশের প্রতি তাদের কোনো মায়া নেই। সরকারের ইশারায় বেগম জিয়া অসুস্থ সত্তে¡ও মুক্তি পাচ্ছেন না।

গতকাল (শনিবার) বন্দরনগরীর নাসিমন ভবনের সামনে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমাবেশে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ একথা বলেন। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সমাবেশে বিভিন্ন বক্তা মাঠ আন্দোলনের কর্মসূচি দেয়ার দাবি জানান। তবে বক্তব্যে মির্জা ফখরুল আন্দোলনের কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করেননি। পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি সত্তে¡ও কর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে সমাবেশে সর্বস্তরের জনতার ঢল নামে

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, দুইবারের বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যখন একদলীয় শাসন কায়েমের বিরুদ্ধে সোচ্চার এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে দেশের পথে-প্রান্তে ছুটে বেড়াচ্ছেন তখন তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে নিক্ষিপ্ত করা হয়েছে। তাকে সুচিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না। এ সরকার ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় এসেছে বলে দেশের প্রতি তাদের কোন মায়া নেই। তারা বন্যার্ত মানুষের পাশে নেই। বিএনপি মহাসচিব বলেন, ১৯৭২ সালে ক্ষমতায় এসে তারা সমস্ত দল নিষিদ্ধ করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিল। এখনও সেই আলামত দেখা যাচ্ছে। সরকার গায়ের জোরে দেশ চালাচ্ছে। তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বাসনে রাখা হয়েছে। সরকার বিচার বিভাগ ও পুলিশ বিভাগকে দলীয়করণ করেছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের মামলা দিয়ে ঘর ছাড়া করেছে। তারা গণতন্ত্রকে, দেশের মানুষকে ভয় পায়। সে কারণে ভোট চুরির মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে। একজন প্রতিমন্ত্রীর নেতৃত্বে হজ প্রতিনিধি দলে যাওয়ায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল তার পদত্যাগ দাবি করেন। তিনি নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়া মুক্ত না হলে গণতন্ত্র মুক্তি পাবে না। আর খালেদা জিয়া মুক্ত হলে শেখ হাসিনার সরকার টিকবে না। তিনি বলেন, নানা অজুহাতে জামিন না দিয়ে খালেদা জিয়াকে কারাগারে রাখা হয়েছে। গণতন্ত্র ছাড়া দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে আনতে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, আগামী শত বছরেও বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করা যাবে না। সরকার ভোটকে ভয় পায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, যত অত্যাচার নির্যাতন করুক না কেন গণতন্ত্রের জয় হবে। যে মামলায় খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়া হয়েছে সে মামলায় পাঁচ দিনের বেশি থাকার কথা নয়। অথচ সরকারের রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে তিনি জামিন পাচ্ছেন না। আইন প্রক্রিয়ায় জামিন না হলে রাজপথে যাওয়া ছাড়া বিকল্প নেই। তিনি অভিযোগ করেন পুলিশ সামাজিক অপরাধ দমন না করে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেফতারে ব্যস্ত রয়েছে। ব্যারিস্টার মওদুদ রোহিঙ্গাদের অবিলম্বে ফেরত পাঠানোর দাবি জানান।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, যাদের মশা মারার ক্ষমতা নেই তারা এখন মানুষ মারছে। শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে গণতন্ত্র ও খালেদা জিয়া মুক্তি পাবে। খালেদা জিয়ার মুক্তি পাওয়া না পাওয়া শেখ হাসিনার ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, বর্তমান অবস্থার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করিনি। সমৃদ্ধ বাংলাদেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।

স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেয়া হয়েছে একটি নির্বাচনে চুরি করে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য। সরকার মনে করেছে নির্বাচনের পরে বিএনপি দমে যাবে। তিনি বলেন, ক্ষমতায় থাকতে হলে গণতন্ত্রের মাকে কারাগারে রাখতে হবে। বর্তমান সরকার আইন, সংবিধান লঙ্ঘন করছে।

বিএনপির সহ-সভাপতি আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, খালেদা জিয়া রাজনীতির বিচ্ছিন্ন নেত্রী নন। তিনি ১৬ কোটি মানুষের নেত্রী। তাকে রাজনৈতিক কারণে কারাগারে নেয়া হয়েছে। বিএনপির সহ-সভাপতি বরকত উল্লাহ ভুলু বলেন, দেশের ৬ কোটি বানভাসি মানুষকে ফেলে সরকার প্রধান বিদেশে রয়েছেন। গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের প্রতীক খালেদা জিয়াকে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে মুক্ত করতে হবে। বিএনপির সহ-সভাপতি মো. শাহজাহান বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়া না হলে দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে তাকে মুক্ত করা হবে।

বিএনপির সহ-সভাপতি মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন বলেন, চট্টগ্রাম থেকে খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন শুরু হয়েছে। সহ-সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, অনির্বাচিত সরকারের পতনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। সহ-সভাপতি গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী বলেন, সরকারের অত্যাচারের শেষ নেই। বিচার বিভাগের ব্যবস্থাপনা তাদের হাতে। দুঃশাসন থেকে মুক্তি পেতে আন্দোলনের বিকল্প নেই। তিনি দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, আমরা আন্দোলনের কর্মসূচি চাই। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের মানুষ আর সাঁতার কাটতে চায় না। একটু বৃষ্টি হলেই নগরী পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে।

সমাবেশের সভাপতি ও মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে রূপ দিতে গিয়ে খালেদা জিয়া কারাগারে রয়েছেন। তিনি আন্তর্জাতিকভাবে নেলসন ম্যান্ডেলার জনপ্রিয়তাকে হার মানিয়েছেন।

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ফারুক, উপদেষ্টা অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন, উপদেষ্টা গোলাম আকবর খন্দকার, উপদেষ্টা ড. সুকুমার বড়–য়া, উপদেষ্টা এস এম ফজলুল হক, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, কেন্দ্রীয় মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল আলম বাবু, বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান শামীম, কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শাহজাহান, যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা মোক্তাদির বাচ্চু, তাঁতি দলের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াছিন আলী, বান্দরবান জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাচিং প্রু জেরী, খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল অদুদ ভূঁইয়া, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় নেতা এ এম নাজিম উদ্দিন, মহিলা দলের সাবেক সভানেত্রী নূরী আরা সাফা, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল আহমদ, সহ-সম্পাদক হারুন-অর রশীদ, মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ইদ্রিস মিয়া, দক্ষিণ জেলা যুবদলের সভাপতি মোহাম্মদ শাহজাহান প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর ও নগর বিএনপি নেতা কামরুল ইসলাম

ব্রেকিং নিউজ :
Shares