রাস্তার কাজ নিম্নমানের হওয়ায় দফায় দফায় চিঠি দেয়া হলেও মানছেন না সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার


rafiq প্রকাশের সময় : নভেম্বর ২৫, ২০১৮, ০৬:১৬ / ৩৪০
রাস্তার কাজ নিম্নমানের হওয়ায় দফায় দফায় চিঠি দেয়া হলেও মানছেন না সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার

এম সহিদুুল ইসলাম (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি ॥

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার শ্রীখাতা (সোনামারি) খোদরপাড়া সড়কটি পাককরণে নিম্নমানের ও ব্যবহার অযোগ্য ইটের খোয়া ব্যবহার করায় এলজিইডির পক্ষ থেকে সেগুলো অপসারণ করে মানসম্পন্ন ইটের খোয়া ব্যবহারের জন্য দফায় দফায় চিঠি দেওয়া হলেও কোনো ভাবেই তা মানছেন না সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার।

এমনকি ১৫ অক্টোবর একাধিক গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর সরেজমিন পরিদর্শনেও অভিযোগের সত্যতা পেয়েছিলেন লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী। এতেও শেষ নয়, ব্যবহৃত খোয়ার নমুনা পরীক্ষাগারে পরীক্ষার মাধ্যমেও প্রমাণিত হয় নিম্নমানের খোয়া। ফলে সেসব সরিয়ে সিডিউল অনুযায়ী মানসম্পন্ন খোয়া ব্যবহারের জন্য আদেশ দেওয়া হলেও কর্ণপাত করেননি ঠিকাদার। উল্টো এতকিছুর পরেও তিনি ওইসব নিম্নমানের খোয়া দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। সর্বশেষ ব্যবহৃত খোয়া সমান করতে রোলালের পর তিনি এখন সেখানে পানি ছিটাচ্ছেন ইটের ‘রং’ ফিরিয়ে আনার জন্য।

অপরদিকে কাজটি তদারকিতে প্রকৌশলীর বদলে এলজিইডির একজন সার্ভেয়ারকে সংযুক্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। যার কোনো ডিপ্লোমা ডিগ্রী নেই। আইনুল হক নামের ওই সার্ভেয়ারের সাথেই মূলত যোগসাজশ করে ইচ্ছেমতো সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার কাজ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

সূত্র মতে, প্রকাশিত খবরের পরপরই সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে লালমনিরহাটে সদ্য যোগদানকারী নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম আমিরুজ্জামান অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন। ফলে সে ঘটনা উল্লেখসহ চতুর্থ দফায় কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী গত মঙ্গলবার আরোও একটি চিঠি ঠিকাদার আব্দুল হাকিমকে পাঠিয়েছেন।

সূত্র মতে, চিঠিতে একই বিষয়ে তিনটি চিঠি দেওয়ার কথা উল্লেখ করে বলা হয় ‘‘সড়কের কাজ বাস্তবায়নকালীন সময়ে সরেজমিন পরিদর্শনে ‘সবিস্তার বিবরণী’ বর্হিভূত নিম্নমানের ইটের খোয়া অপসারণে লিখিতভাবে বলা সত্বেও তা অপসারণ না করে কাজ চলমান রেখেছেন। গত ১৫ অক্টোবর নির্বাহী প্রকৌশলীও বিষয়টি পরিলক্ষিত হন এবং তিনি মানসম্পন্ন সামগ্রী মজুদসহ অফিসের নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করার কথা বলা সত্বেও তা উপেক্ষা করে আপনি কাজ চলমান রেখেছেন’।

এদিকে অভিযোগ ওঠার পর গত ১৭ অক্টোবর লালমনিরহাট এলজিইডির ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান আব্দুর রাজ্জাক নির্মানাধীন সড়কটি থেকে ডাব্লিউবিএমে ব্যবহৃত খোয়ার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করেন। পরীক্ষাতেও নিম্নমানের খোয়া ব্যবহারের সত্যতা মিলেছে বলে জানা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত সপ্তাহে লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলীর সরেজমিন পরিদর্শনের পরেও ডাব্লিউবিএমে ব্যবহার করা খোয়া সমতল করতে রোলার দিয়ে সমান করা হয়েছে। আর এরপর থেকে প্রতিদিনই ওই খোয়ার রং ফিরিয়ে আনতে সেখানে পানি ছিটানো হচ্ছে।

এলজিইডি সূত্র মতে, যেকোনো উন্নয়নমূলক কাজ তদারকিতে এলজিইডির অন্তত একজন উপসহকারী প্রকৌশলী সংযুক্ত করার কথা। কিন্তু ওই সড়কের জন্য কালীগঞ্জ থেকে সম্প্রতি বদলি হয়ে যাওয়া উপজেলা প্রকৌশলী পারভেজ নেওয়াজ খান সংযুক্ত করেছেন সেখানে কর্মরত সার্ভেয়ার আইনুল হককে।

জানা গেছে, কোনো সার্ভেয়ার তদারকির দায়িত্ব তখনই পাবেন যখন তিনি ডিপ্লোমা ডিগ্রীধারী হবেন। অথচ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তার কোনো ডিপ্লোমা সার্টিফিকেট নেই।

কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলীর দায়িত্বে থাকা লালমনিরহাটের জ্যেষ্ঠ্য সহকারী প্রকৌশলী মাসুদার রহমান ঠিকাদারকে একাধিকবার চিঠি দেওয়ার সত্যতা স্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, ‘চিঠিগুলোতে নিম্নমানের সামগ্রী অপসারণের কথা বলেছেন। তা মানা না হলে বিল বন্ধসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’। ফলোআপ

ব্রেকিং নিউজ :
Shares