বিএনপি মহাসচিব, ফখরুল এর আসন শূন্য। মান্না বললেন খোলাসা করুন।


rafiq প্রকাশের সময় : মে ১, ২০১৯, ০৩:৩০ / ৮৯৫
বিএনপি মহাসচিব, ফখরুল এর আসন শূন্য। মান্না বললেন খোলাসা করুন।

বিডি সংবাদ ৭১ ডেস্ক নির্দিষ্ট সময়ে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ না নেওয়ায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের আসনটি শূন্য হয়ে গেল, ফলে বগুড়া-৬ আসনটিতে নতুন করে ভোটের উদ্যোগ নেবে নির্বাচন কমিশন। গতকাল মঙ্গলবার রাতে সংসদ অধিবেশনে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এই ঘোষণা দেন। অন্যদিকে বিএনপির নির্বাচিত চারজনের শপথ গ্রহণের পেছনে কোনো সমঝোতা আছে কি না, তা খোলসা করার আহŸান জানিয়েছেন মাহমুদুর রহমান মান্না। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উপস্থিতিতে গতকাল মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে তাদের জোটসঙ্গী এই নেতা বলেন, যদি সমঝোতা হয় তা হলে সেই সমঝোতাটা খোলাখুলি বলেন, কী সমঝোতা হয়েছে? তার প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেছেন, বিএনপি সমঝোতা করলে অনেক আগেই সমঝোতা করতে পারত। বেগম খালেদা জিয়া যদি সমঝোতা করতেন তাহলে উনি প্রধানমন্ত্রী থাকতেন, অন্য কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন না, এই কথাগুলো আপনাদের মনে রাখতে হবে।
এদিকে নির্দিষ্ট সময়ে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ না নেওয়ায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের আসনটি শূন্য হয়ে গেল, ফলে বগুড়া-৬ আসনটিতে নতুন করে ভোটের উদ্যোগ নেবে নির্বাচন কমিশন। গতকাল মঙ্গলবার রাতে সংসদ অধিবেশনে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এই ঘোষণা দেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে নির্বাচিত পাঁচজন সংসদ সদস্য নানা নাটকীয়তার পর শপথ নিলেও দলটির মহাসচিব ফখরুল নেননি। তিনি বলেছেন, দলীয় সিদ্ধান্তেই তিনি শপথ নেওয়া থেকে বিরত থাকছেন। এটা তাদের ‘কৌশলেরই অংশ’। সেক্ষেত্রে ফখরুলের বিষয়ে কী হবে- এ প্রশ্নের জবাবে স্পিকার শিরীন শারমিন বলেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শপথ না নিলে সংবিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংবিধানের ৬৭ (১) এর ‘ক’ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কোনো নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম বৈঠকের তারিখ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে শপথ নিতে না পারলে ওই সংসদ সদস্যের আসন শূন্য হবে। তবে এই ৯০ দিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে স্পিকার যথার্থ কারণে তা বাড়াতে পারবেন।
একাদশ সংসদের কার্যক্রম গত ২৯ জানুয়ারি শুরু হওয়ায় ৯০ দিনের সেই সময়সীমা গত সোমবার পেরিয়ে যায়। শেষ দিনে বিএনপির চারজন সংসদ সদস্য শপথ নেন, তার তিন দিন আগে নেন আরেকজন। বিএনপি মহাসচিব শপথ নিতে কোনো আবেদনও করেননি বলে জানান স্পিকার।
রাতে সংসদের অধিবেশনে শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, সংবিধান অনুযায়ী সংসদের প্রথম বৈঠক থেকে ৯০ দিনের মধ্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শপথ নিতে অসমর্থ হওয়ায় তার আসনটি শূন্য হয়েছে। জাতীয় সংসদের কোনো আসন শূন্য হলে কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ী তা সংসদকে জানাতে হয়; সেটাই জানান স্পিকার।
কার্যপ্রণালী বিধির ১৭৮ (৩) বিধিতে বলা আছে, যদি কোনো সদস্য তার আসন থেকে পদত্যাগ করেন কিংবা সংসদের অনুমতি না নিয়ে একাধিক্রমে ৯০ দিন বৈঠকে অনপুস্থিত থাকেন, কিংবা সংবিধানের ৬৭ অনুচ্ছেদের (১) (ক) দফায় উল্লেখিত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শপথগ্রহণ করতে ও শপথ-পত্রে স্বাক্ষর প্রদান করিতে ব্যর্থ হন কিংবা অন্য কোনোভাবে সদস্য না থাকেন, তাহলে সংসদ অধিবেশনে থাকলে স্পিকার তা সংসদের গোচরে আনবেন। তবে শর্ত থাকে যে, সংসদ অধিবেশনে না থাকলে পরবর্তী অধিবেশন আরম্ভ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই স্পিকার সংসদকে জানাবেন যে, অধিবেশন মধ্যবর্তী সময়ে ওই সদস্য পদত্যাগ করেছেন বা সদস্যপদ হারিয়েছেন।
ভোটের পর বিএনপি শপথ না নেওয়ার ঘোষণা দিলে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেছিলেন, কেউ ৯০ দিনের মধ্যে শপথ না নিলে ওই আসন শূন্য ঘোষণার পর নতুন নির্বাচনের উদ্যোগ নেবেন তারা।
নানা নাটকীয়তার মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেওয়ার পর ফখরুল দুটি আসনে ভোটের লড়াইয়ে নেমেছিলেন। নিজের জেলা ঠাকুরগাঁও-১ আসনে তিনি হারলেও বিজয়ী হন দলীয় প্রধান খালেদা জিয়ার আসন বগুড়া-৬ এ। ৩০ ডিসেম্বরের ওই নির্বাচনে ভোট ডাকাতির অভিযোগ তুলে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট পুনর্নিরবাচনের দাবি তোলে। সেই সঙ্গে ঘোষণা দেয়, তাদের জোট থেকে বিজয়ীরা শপথ নেবেন না। কিন্তু কিছু দিন পর ঐক্যফ্রন্ট থেকে বিজয়ী গণফোরামের দুজন শপথ নিয়ে ফেলেন; এরপর গত ২৫ এপ্রিল বিএনপির একজন শপথ নেওয়ার পরও আগের সিদ্ধান্তে অটল থাকার কথাই জানিয়েছিল বিএনপি।
কিন্তু ২৯ এপ্রিল চারজন শপথ নেওয়ার পর ফখরুল সংবাদ সম্মেলন করে জানান, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে ওই চারজন শপথ নিয়েছেন। তার শপথের বিষয়ে গত সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্ট কিছু বলেননি ফখরুল; তবে একদিন বাদে জানান, তিনি সংসদে যাচ্ছেন না।

ব্রেকিং নিউজ :
Shares