ফেক আইডি দিয়ে ফেসবুকে অপবাদ ছড়ানোই গৃহবধুর আত্মহত্যা,অকারনেই স্বামিকে দোষারোপ


rafiq প্রকাশের সময় : মে ২০, ২০২১, ১১:০৫ / ২০১
ফেক আইডি দিয়ে ফেসবুকে অপবাদ ছড়ানোই গৃহবধুর আত্মহত্যা,অকারনেই স্বামিকে দোষারোপ

ফেক আইডি দিয়ে ফেসবুকে অপবাদ ছড়ানোই গৃহবধুর আত্মহত্যা,অকারনেই স্বামিকে দোষারোপ

মেহেদী হোসেন পলাশ মধুখালী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি ১৬ মে রোববার ঃ ফরিদপুরের মধুখালীতে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করায় অপবাদ সইতে না পেরে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধু গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

১৬ মে রোববার সকালে ওই গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে মধুখালী থানা পুলিশ।

গৃহবধুর নাম রীমা রানী সাহা (২২)। সে উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের আড়কান্দি গ্রামের পলাশ কুমার সাহার স্ত্রী। পলাশ সাহা মধুখালী বাজারের মুদি ব্যবসায়ী। গৃহবধু রীমা ৫মাসের অন্তঃস্বত্তা ছিলেন। শ্বশুর বাড়ি থেকেই রীমার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

জানা যায়, ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের আড়কান্দি গ্রামের বাসিন্দা প্রভাষ কুমার সাহার ছেলে পলাশ কুমার সাহার সাথে চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার নানবার গ্রামের বাসিন্দা নিশ্চিন্ত কুমার সাহার মেয়ে রীমা রানী সাহার দীর্ঘ চার বছর আগে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। বিয়ের পর থেকে তারা সুখে শান্তিতেই সংসার করছিলেন।

সম্প্রতি ‘সুখতারা’ নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে রীমা সাহার নামে বিভিন্ন অপবাদ ছড়িয়ে দেওয়া হয়। মিথ্যা অপবাদ সইতে না পেরে শনিবার ১৫ মে বিকালে শ্বশুর বাড়ির ঘরের আড়ার সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন সে।

রীমার শ্বশুর প্রভাষ সাহা বলেন, কয়েকদিন আগে একটি অচেনা মোবাইল নম্বর থেকে আমার মোবাইলে কল আসে। অপর পাশ থেকে বলা হয়, আমার পুত্রবধুর চরিত্র খারাপ, তার এক যুবকের সাথে পরোকিয়া সম্পর্ক রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন খারাপ কথাবার্তা বলে। আমি তার পরিচয় জানতে চাইলে সে পরিচয় দিতে রাজি হয়নি। তাকে প্রমান দিতে বলি , সে বলে প্রমান যেদিন দিতে পারবো সেদিনই আমার পরিচয় জানতে পারবেন।

তিনি আরো বলেন, এর কয়েকদিন পর আবার ফোন আসে আরেকটি অচেনা নম্বর থেকে, একই কথা বলা হয় আমাকে। বিষয়টি আমি পরিবারের কাউকে জানায়নি, পুত্রবধু অন্তঃসত্ত্বা থাকায় তাকেও জানাইনি। এরপর ‘সুখতারা’ নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে আমার নাতিছেলে মেয়ের ছেলে উৎস’র মেসেঞ্জারে পুত্রবধু রীমাকে নিয়ে বিভিন্ন কুরুচিপূর্ন মন্তব্য করা হয়। আমার নাতিছেলে প্রমান চাইলে কোনো প্রমান দিতে পারেনি।

প্রভাষ সাহা বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা পারিবারিকভাবে রীমাকে কিছুই বলিনি। কারন কোনো প্রমান পাইনি তাই রীমাকে কিছুই বলা হয়নি। হয়তো অন্য কারো কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পারে রীমা। মিথ্যা অপবাদ সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে রীমা। রীমার আত্মহত্যার জন্য যারা দায়ী তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করি।

মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: শহিদুল ইসলাম জানান, রীমার মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। সে আত্মহত্যা করেছে, নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে বিষয়টি তদন্তের কাজ করছে পুলিশ। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলেই বিষয়টি জানা যাবে।

তিনি আরো বলেন, এছাড়া রীমাকে নিয়ে যারা মোবাইলে ও ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে বিভিন্ন মন্তব্য করেছে সেই বিষয়েও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। তাদের খঁুজে বের করতে ইতিমধ্যেই অভিযান পরিচালনা শুরু হয়েছে। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

ব্রেকিং নিউজ :
Shares