প্রার্থিতা বাতিলে উচ্চ আদালতের এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন,মির্জা ফখরুলের ইসলাম আলমগীর এর


rafiq প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ২১, ২০১৮, ২১:১৫ / ২৭৬
প্রার্থিতা বাতিলে উচ্চ আদালতের এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন,মির্জা  ফখরুলের ইসলাম আলমগীর এর

রফিক চৌধুরী————————— নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রার্থীকে বৈধ ঘোষণা দিয়ে প্রতীক বরাদ্দের পর উচ্চ আদালতের প্রার্থিতা বাতিল করার এখতিয়ার রয়েছে কি-না, এই প্রশ্ন তুললেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রশ্ন তুলে ফখরুল বলেন, বিচার বিভাগ ‘উদ্দেশ্যমূলকভাবে’ বিএনপির প্রার্থীদের প্রার্থিতা বাতিল করছেন। হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছেন, এই আদেশটাকে এখন আমরা কী বলব? কী বলব আমরা সেটাকে? এটাকে কি আইনসম্মত বলব? নাকি বেআইনি বলব? নাকি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলব? একই আদালতে একই কারণে একজনকে বৈধ, আরেকজনকে অবৈধ বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, মার্কা নিয়ে প্রার্থী চলে গেছেন, এরপর ট্রাইব্যুনালে যেতে পারবেন নির্বাচনের পরে, এর আগে নয়। বিএনপির ওপর হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। শুধু হস্তক্ষেপ নয়, আমার দলের মনোনয়ন আমি কাকে দেব, সেটাও হাইকোর্ট থেকে বলে দেওয়া হয়েছে। তাহলে আমি কী করে বলব, হাইকোর্ট থেকে আমি সুবিচার ও ন্যায়বিচার পাচ্ছি? আমি কী করে বলব, হাইকোর্ট তার আইনের প্রয়োগ করছেন? যেসব আসনে বিএনপির প্রার্থীদের অবৈধ ও ‘বেআইনিভাবে’ শূন্য ঘোষণা এবং বাতিল করা হয়েছে, সেই আসনগুলোতে আমাদের প্রার্থী দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হোক। অথবা সেই আসনগুলোতে নির্বাচন স্থগিত রাখা হোক। এই কথাটি আমরা ইসিতে গিয়ে বলেছি।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা শুনতে পাচ্ছি, আগের রাতেই ব্যালট বাক্স বোঝাই করে রাখা হবে। এটাই পরিকল্পনা। আমরা শুনতে পাচ্ছি, এগুলো করার জন্য ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর’ কয়েকটি জোট তৈরি করা হয়েছে। বিশেষ বিশেষ কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন এবং বিচারবিভাগ আজকে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য এক জোট হয়েছে। এটা আমাদের কাছে শুধু বিষ্ময়কর নয়, অত্যন্ত আতঙ্কের। আমরা এ কথাগুলো অত্যন্ত দায়িত্ব নিয়ে বলছি। আমরা আশা করেছিলাম, তফসিল ঘোষণার পর বিরোধী দলগুলো তাদের প্রার্থী ও নেতা-কর্মীদের নিয়ে প্রচারণায় নামতে পারবেন, মামলা স্থগিত থাকবে। কিন্তু এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে, এই পরিস্থিতিতে কোনো মতেই অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতে পারে না। হওয়ারও কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।

ফখরুল বলেন, নির্বাচনের আর সাতদিন বাকি। এই ছয় থেকে সাত দিনের মধ্যে আমরা আশা করি, এখনো আশা করছি যে ইসি ও সরকার শেষ মুহূর্তে তার সম্ভিত ফিরে পাবে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সেনাবাহিনী সবাই দেশপ্রেম, দায়িত্ববোধ ও কর্তব্যবোধ নিয়ে তাদের দায়িত্ব পালন করবেন বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।

বিএনপি-জামায়াত ভুয়া ব্যালট পেপার ছাপাচ্ছে- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ভুয়া ব্যালট পেপার তাহলে আপনারা ছাপানো শুরু করে দিয়েছেন? প্রধানমন্ত্রী নিজে একথা কী করে বলতে পারেন? এটা সম্পূর্ণ অনৈতিক। আগে বলেছেন, ভুয়া ব্যালট পেপার ছাপানোর কথা। প্রধানমন্ত্রী গুজব ছড়াচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। অনৈতিক পরামর্শ দেওয়া অপরাধ, তাহলে ইসির উচিত তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। আমি দাবি করব, ইসি এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

আরও পড়ুন

বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, আমরা কার সঙ্গে লড়াই করছি? সেটা আমরা বুঝতে পারছি না। কারণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিএনপির ‘প্রতিপক্ষ’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায় ১৫ জন ধানের শীষের প্রার্থী এখন কারাগারে রয়েছেন। এখন দেশে কোনো ক্রাইম নেই। বিএনপির নির্বাচনে নামাটাই হচ্ছে এখন সবচেয়ে বড় ক্রাইম। একদিকে আওয়ামী লীগের ‘সন্ত্রাস’, অন্যদিকে রাষ্ট্রের ‘সন্ত্রাস’। এই দুই সন্ত্রাসে তারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করছে। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান, শাহ মোয়জ্জেম হোসেন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ব্রেকিং নিউজ :
Shares