প্যারোলে নয়,খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি চাই বি,এন,পি-মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ।


rafiq প্রকাশের সময় : এপ্রিল ৮, ২০১৯, ০৩:৫৬ / ৩১০
প্যারোলে নয়,খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি চাই বি,এন,পি-মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।    ।

বিশেষ সংবাদ দাতা প্যারোলে নয়, খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমরা প্যারোলে মুক্তির বিষয়ে কোন কথা বলিনি। আমরা সবসময় বলেছি, এখনো বলছি দেশনেত্রীকে নিঃশর্তভাবে মুক্তি দিতে হবে। জামিন পাওয়া বেগম খালেদা জিয়ার আইনি অধিকার। কারণ তাকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে জোর করে আটকে রাখা হয়েছে। সেই একই মামলায় অন্যান্য আসামীরা জামিনে রয়েছেন। গতকাল (রোববার) বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বিএনপি আয়োজিত প্রতীকী অনশন কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এই দেশকে বাঁচাতে হলে, মানুষকে বাঁচাতে হলে, ভবিষ্য প্রজন্মকে বাঁচাতে হলে দেশনেত্রীকে বাইরে নিয়ে এসে তার (খালেদা জিয়া) নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করে নিয়ে আসতে হবে। এটাই হচ্ছে আমাদের লক্ষ্য। আসুন আমরা সবাই এই লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হই এবং জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করি দেশনেত্রীর মুক্তির জন্য। তিনি অভিযোগ করে বলেন, দেশনেত্রীর কোনো চিকিৎসা হচ্ছে না। তাকে তার মতের বিরুদ্ধেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) আনা হয়েছে। তিনি চাচ্ছেন বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে। তিনি বলেন, পিজি হাসপাতালের বিরুদ্ধে আমরা বলিনি। আমরা বলতে চেয়েছি যে, পিজি হাসপাতাল সরকারি হাসপাতাল, সরকারি নিয়ন্ত্রণ থাকবে সবসময় এবং সরকার সেই নিয়ন্ত্রণ করে তার চিকিসাকেও পরিচালনা করতে চায়। তিনি সেখানে সুচিকিৎসা পাননা। সেজন্য আমরা বলেছি তার সুচিকিসার জন্য তার পছন্দমতো বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার তাকে সুযোগটি দেয়া হোক।
পূর্বঘোষণা অনুযায়ী সকাল ১০টায় ইন্সটিটিউশনের মিলনায়তনে বাইরে এই অনুষ্ঠানের ঘোষণা থাকলেও কর্তৃপক্ষের অনুমতি না পাওয়ায় মিলনায়তনেই অনশন কর্মসূচি করে সকাল সাড়ে ১০টায়। মিলনায়তনের মঞ্চে মাদুর বিছিয়ে বিএনপি মহাসচিবের নেতৃত্বে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ কয়েক হাজার নেতা-কর্মী সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪ টা পর্যন্ত এই প্রতীক অনশনে অংশ নেন। কর্মসূচিতে মহানগর বিএনপি, যুব দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, ছাত্র দলসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে মূহুমূহু শ্লোগান দেয়। পরে বিকাল সাড়ে ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. এমাজউদ্দিন আহমেদ মহাসচিবসহ নেতাদের পানি পান করিয়ে অনশন ভঙ্গ করান।
অনশনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে বর্তমানে গায়ের জোরের সরকার ভয় পায়, বিএনপিকে ভয় পায়, শহীদ জিয়াউর রহমানকে ভয় পায়, তারেক রহমানকে ভয় পায়। সেজন্যই আজকে বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে। মামলা কিছু নয়। যে মামলায় কারাগারে গিয়েছে সেই মামলার সাথে তার সম্পৃক্ততা ছিলো না। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক ওই মামলা। আজকে প্রমাণ হয়েছে, এদেশে গণতন্ত্র দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মতোই এই সরকারের বাক্সে বন্দি, কারাগারে বন্দি। তাই আজকে আমাদের সকলের একটাই প্রত্যয় হবে, গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হবে। গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হলে গণতন্ত্রের মাকে আগে মুক্ত করতে হবে এবং দেশনেত্রীর নেতৃত্বেই আবার গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ১৩ মাস যাবত বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে আছেন। যে মিথ্যা মামলায় তাকে (খালেদা জিয়া) সাজা দেয়া হয়েছে তারপরেও গতানুগতিকভাবে অন্য যেকোনো নাগরিকের জন্য সেভাবে আইন প্রয়োগ করা হতো তাহলে ৭/১০ দিনের মধ্যে তার জামিনে মুক্ত হয়ে যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু হয় নাই। এর কারণ হলো আমাদের আপ্রাণ প্রচেষ্টা থাকা সত্বেও এবং মাঠে-ময়দানে দাবি-আন্দোলন থাকা সত্বেও আমরা সেটা অর্জন করতে পারি নাই। পারি নাই এই কারনে যে, আদালতের প্রক্রিয়ার মধ্যে সরকারের প্রভাবের কারনেই বেগম খালেদা জিয়ার জামিন এখনো অর্জিত হয়নি।
জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রব বলেন, শ্লোগান দিয়ে খালেদা জিয়া মুক্ত হবে না। যদি তাকে মুক্ত করতে চান তাহলে সকলকে সারা বাংলায় ছড়িয়ে পড়তে হবে, গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পড়তে হবে, জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে জাতীয় নেত্রীকে মুক্ত করার জন্য, তিনি এখন শুধু বিএনপি নেত্রী নন।তিনি বলেন, এক লাখ কর্মী জেলে আছে, ৫০ লাখ কর্মীর মামলা আছে। দরকার হলে আরো ৫০ লাখ আমরা কারাগারে যেতে রাজী আছি তাহলে খালেদা জিয়া মুক্ত হতে পারে। আমি এখনই আপনাদের সাথে রাস্তায় নামতে রাজী আছি, আপনারা রাস্তায় নামবেন কিনা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন। আপনাদের (বিএনপি) নেতাদের বলুন, খালেদা জিয়ার মুক্তি দয়ায় নয়, অধিকার, দাবি। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হলে রাজপথে যেতে হবে, রাজপথে আন্দোলনে মাধ্যমে তাকে মুক্ত করে আনতে হবে।
গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের বার্তা বিএনপির নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরেন সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু। যেখানে তিনি বলেন, আজকে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে একটা কথা বলে যাই, আপনি জননেত্রী হিসেবে দাবি করেন, আপনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিজেকে দাবি করেন- আপনি গণভোট নিয়ে দেখুন শতকরা ৯৫ ভাগ লোক বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি চায়। আপনি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব রাজনৈতিক পরিবারের লোক রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করুন, একটা অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মতো কেনো ব্যবহার করেন। আমি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি কামনা করছি।
প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও সহ প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের পরিচালনায় গণ-অনশনে গণস্বাস্থ্য সংস্থার ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, এজেডএম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, আহমেদ আজম খান, আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, গোলাম আকবর খন্দকার, মজিবুর রহমান সারোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, কামরুজ্জামান রতন, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, এবিএম মোশাররফ হোসেন, মাহবুবুল হক নান্নু, খন্দকার আবু আশফাকসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া বক্তব্য রাখেন যুব দলের মোরতাজুল করীম বাদরু, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসাইন, উলামা দলের শাহ মো. নেছারুল হক, নজরুল ইসলাম তালুকদার, ছাত্র দলের আকরামুল হাসানসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা।
অনশনে একাত্মতা প্রকাশ করেন গণফোরামের অ্যাডভোকেট সুব্রত চেব্রুরী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের হাবিবুর রহমান তালুকদার, ২০ দলীয় জোটের শরিক খেলাফত মজলিসের অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ইসহাক, আহমেদ আবুল কাদের, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, ন্যাপ-ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, আসাদুর রহমান খান আসাদ, ডেমোক্রেটিক লীগের সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, জমিয়তে উলামা ইসলামের মাওলানা নুর হোসেইন কাশেমী, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, মুসলিম লীগের শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, বাংলাদেশ পিপলস পার্টির রিটা রহমান, পিপলস লীগের সৈয়দ মাহবুব হোসেন, বাংলাদেশ ইসলামি পার্টির আবু তাহের।
গণঅনশনে বিএনপির আবদুল আউয়াল মিন্টু, মনিরুল হক চৌধুরী, সাহিদা রফিক, সাখাওয়াত হাসান জীবন, বিলকিস জাহান শিরিন, শামা ওবায়েদ, গৌতম চক্রবর্তী, দেওয়ান মো. সালাহউদ্দিন, আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, আবদুস সালাম আজাদ, শামীমুর রহমান শামীম, আবদুল আউয়াল খান, মীর নেওয়াজ আলী, হারুনুর রশীদ, আমিরুজ্জামান শিমুল, খন্দকার মারুফ হোসেন, নিপুণ রায় চৌধুরী, সাইফুল আলম নিরব, শফিউল বারী বাবু, কাজী আবুল বাশার, নবী উল্লাহ নবী, হাসান জাফির তুহিন, তকদির হোসেন জসিমসহ অঙ্গসংগঠনের কয়েক হাজার নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।

ব্রেকিং নিউজ :
Shares