।।জসিম মাহমুদ।।নতুন পোশাক পরে না আসায় বই উৎসবে বছরের প্রথম দিন নতুন বই পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছে সিলেটের একটি সরকারি প্রাথমিক স্কুলের কিছু শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার দেশের সব স্কুলে প্রথম থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে যখন তুলে দেওয়া হয় নতুন পাঠ্যপুস্তক, তখন ওই স্কুলের কিছু শিক্ষার্থী কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে ফেরে। নগরীর উমরশাহ তেররতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘটেছে এমন ঘটনা।
এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রোকসানা খানম বলেছেন, নতুন ড্রেস পরে এসে বই নিয়ে যেতে মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে। তাই পুরনো ড্রেস পরে এলে বই দিচ্ছি না।
তবে মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র দেখতে চাইলে তিনি তা দেখাতে পারেননি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা দেড়টার দিকে ওই স্কুলের কিছু শিক্ষার্থীকে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে। ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ আশপাশের বস্তিতে বসবাস করে। যাদের অভিভাবকদের সিংহভাগ দিনমজুর।
স্থানীয় তেররতন বস্তির গোলাম মোস্তফা ও খাদিজা বই নিতে এসে খালি হাতে ফেরে নতুন ড্রেস না থাকায়। একই এলাকার নয়নের কলোনীর জহুরা বেগম নাতি রিদান মাহমুদ ইমনকে নিয়ে বই নিতে এসে খালি হাতে ফিরে যান। নগরীর সবুজবাগ কলোনীর সুমাইয়াও ফেরে চোখে জল নিয়ে।
উমরশাহ তেররতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকা রোকসানা খানম সমকালকে বলেন, ফলাফল ঘোষণার দিনই অভিভাবকদের নতুন বছরের প্রথম দিন নতুন ড্রেস পরে ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে বলা হয়েছে। কিন্তু তাদের অনেক পুরাতন ড্রেস পরে আসায় নতুন বই দেওয়া হয়নি। এই স্কুলে ৬শ’র ওপর শিক্ষার্থী রয়েছে, যাদের বড় একটি অংশ দিনমজুর পরিবারের সন্তান বলে জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান শিক্ষিকা বলেন, ক্রমান্বয়ে সবাইকে নতুন বই দেওয়া হবে। চাহিদার তুলনায় বেশি বই রয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে ফোন করে পাওয়া যায়নি। সিলেট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ওবায়দুল্লাহ সমকালকে বলেন, ড্রেসের সঙ্গে নতুন বইয়ের কোনও সম্পর্ক নেই। আমরা ড্রেসের বিষয়টি আস্তে আস্তে করছি। কিন্তু এখানে জোর করার তো কোন ব্যাপার নেই।
ছবি ও তথ্য-দৈনিক সমকাল
আপনার মতামত লিখুন :