চট্রগ্রাম-৯ আসনে নির্বাচনী আমেজ শুরু।সবার মুখে মুখে.. ‘মহিউদ্দিনের পোয়া আইসস্যি’


rafiq প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ১১, ২০১৮, ২০:৪২ / ১৪৫
চট্রগ্রাম-৯ আসনে নির্বাচনী আমেজ শুরু।সবার মুখে মুখে.. ‘মহিউদ্দিনের পোয়া আইসস্যি’

★জসিম মাহমুদ★
চট্টগ্রামের দলমত নির্বিশেষে মহিউদ্দিন চৌধুরীকে নিজেদের নেতা হিসাবে জানতেন। রাজনীতির উর্ধে উঠে তিনি চট্টগ্রামের কথা ভাবতেন। হয়ে উঠেছিলেন গণমানুষের নেতা।

শ্রমিক নেতা থেকে জননেতা হওয়া প্রয়াত সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী রিকশাওয়ালা, কুলি-মজুর, বস্তিবাসীর কাছে ছিলেন বিপদের বন্ধু। মঙ্গলবার নগরীর শাহ আমানত (র.) এর মাজার জেয়ারত শেষে মহিউদ্দিনপুত্র মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল যখন রাস্তার রিক্সাচালক, কুলি, মজুরদের বুকে টেনে নিচ্ছিলেন, তাতে অনেকেই মহিউদ্দিন চৌধুরীর প্রতিচ্ছবি খুঁজছিলেন। সবার মুখে মুখে এক কথা ‘আঁরার মহিউদ্দিনের পোয়া আইসস্যি’।

মঙ্গলবার (১১ ডিসেম্বর) সাত সকালেই ভোটের প্রচারে নেমেছিলেন চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া) আসনের নৌকার প্রার্থী নওফেল। নগরীর জেল রোড এলাকায় নওফেলের উপস্থিতির খবর পেয়েই ছুটে আসতে থাকে সাধারণ মানুষ। সকাল ৮ টার দিকে চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে জেল রোডে আমানত শাহ’র মাজারে যান সাবেক মেয়র মহিউদ্দিনের ছেলে নওফেল। মাজার জেয়ারত শেষে আশপাশের এলাকায় নেমে পড়েন গণসংযোগে।

এদিকে নওফেল যখন আমানত শাহ (র.) এর মাজারে ঢুকতে যাচ্ছিলেন তখন সেখান থেকে বের হয়ে রাস্তায় হাঁটছিলেন বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান।
এ সময় দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে নওফেল এগিয়ে যান নোমানের দিকে। সালাম করে বাড়িয়ে দেন দুহাত। এগিয়ে আসেন প্রবীন নেতা নোমানও। বুকে জড়িয়ে নেন তাঁর পুত্রসম নওফেলকে। ভোট উত্তেজনার শুরুতে মিনিট তিন-চারেকের এই একটি ছবি দারুণ আলোড়িত করে দুপক্ষের নেতাকর্মীদের। বিএনপির নেতাকর্মীরা শ্লোগান দিচ্ছিলেন ‘ধানের শীষ, ধানের শীষ’। নওফেল হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানিযে স্থান ত্যাগ করেন।

চট্টগ্রামের রাজনীতিতে মহিউদ্দিন-নোমানের ভাল সম্পর্কের বিষয়টি প্রচার ছিল। একজন আরেকজনকে মামা-ভাগ্নে বলেই সম্ভোধন করতেন। মহিউদ্দিনের ছেলে নওফেল এখন আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক। একই আসনে না হলেও ভোটের মাঠে মহিউদ্দিনপুত্র আর আবদুল্লাহ আল নোমান এখন প্রবল প্রতিপক্ষ। তাই, সৌহার্দ্যের এই কোলাকুলির ছবি, একে অপরের প্রতি সম্মান, ভোটের মাঠে বেশ আশা জাগানিয়া-বলছেন এখানকার রাজনীতি বিশ্লেষকরা।

প্রচারণা শুরুর সময় মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল সাংবাদিকদের বলেন, ঐতিহ্যগতভাবে চট্টগ্রামের সকলেই শাহ আমানতের মাজার জিয়ারত করে তাদের নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। আমিও শাহ আমানতের মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে দলের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করেছি।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের উন্নয়নের যে মেগা প্রজেক্ট হাতে নিয়েছেন তার সুফল নগরবাসী দেখতে পাচ্ছে। আমরা যা বলি তা করি। মানুষের আস্থা আমাদের (আওয়ামী লীগ) সাথে আছে। রায় আমাদের পক্ষে যাবে প্রত্যাশা করি। চট্টগ্রামের ১৬ টি আসন আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে পারব এ আশা করি।’

প্রচারণায় নওফেলের সঙ্গে ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, সহ-সভাপতি ইব্রাহীম হোসেন চৌধুরী বাবুল ও জহিরুল আলম দোভাষ, মিরসরাইয়ের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গিয়াসউদ্দিন, ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী ও হাসান মুরাদ বিপ্লব, আওয়ামী লীগ নেতা শফিকুল ইসলাম ফারুক, মশিউর রহমান ও চন্দন ধর।

বন্দরনগরীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চট্টগ্রাম-৯ আসনে নওফেলের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি হিসাবে ভাবা হচ্ছে বিএনপির মহানগর কমিটির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনকে।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের টানা ১৭ বছরের মেয়র ছিলেন এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। বর্ষীয়ান এই রাজনীতিকের গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর জীবনাবসান ঘটে।
“সারাবেলা”

ব্রেকিং নিউজ :
Shares