চট্রগ্রাম-১৬ বাঁশখালীঃ জহিরুল স্বতন্ত্র প্রার্থী,জাফরুল বিপাকে


rafiq প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ১১, ২০১৮, ২৩:০০ / ৩০৮
চট্রগ্রাম-১৬ বাঁশখালীঃ জহিরুল স্বতন্ত্র প্রার্থী,জাফরুল বিপাকে

জসিম মাহমুদ।।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে
চট্টগ্রাম-১৬ বাঁশখালী আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জহিরুল ইসলাম তার পছন্দের আপেল প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন। জামায়াতের নিবন্ধন ও প্রতীক বাতিলের কারণে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন।
সোমবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসনের সভা কক্ষে জেলা প্রশাসক ও রিটানিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইলিয়াছ হোসেন তাকে আপেল প্রতীক বরাদ্দ দেন।
প্রসঙ্গত, বাঁশখালী আসনে মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী নৌকা প্রতীকে, জাফরুল ইসলাম চৌধুরী ধানের শীষ প্রতীকে, মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী লাঙল প্রতীকে, ফরিদ আহমদ আনসারি হাতপাখা প্রতীকে, মহিউল আলম চেয়ার প্রতীকে ও মুনিরুল ইসলাম আশরাফি মোমবাতি প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন।

ল্লেখ্য, ২০-দলীয় জোটের প্রার্থী ঘোষণা হয়েছে গত শুক্রবার সন্ধ্যায়। চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে জোটের প্রার্থী হলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী। কিন্তু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মো. জহিরুল ইসলাম। জহিরুলের এই ঘোষণায় জাফরুল বিপাকে পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এতে জাফরুল ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হচ্ছেন।

জামায়াতের নেতা-কর্মীরা জানান, এবারের সংসদ নির্বাচনে বাঁশখালী উপজেলা জামায়াতের আমির জহিরুল ইসলাম জোটের মনোনয়ন চেয়ে পাননি। তাই তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ জন্য উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।
২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের একজন এবং বিএনপির দুজনকে হারিয়ে আত্মবিশ্বাস ফিরে পান জহিরুল ইসলাম। এ কারণে তিনি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর পক্ষে জামায়াতেরও সমর্থন আছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১৩ মার্চ অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মো. জহিরুল ইসলাম ৬৬ হাজার ৩৪২ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান হন। আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী খোরশেদ আলম পেয়েছিলেন ৫২ হাজার ৮৯০ ভোট।
আর বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আলমগীর কবির চৌধুরী পেয়েছিলেন ২১ হাজার ৩৬৫ ভোট। বিএনপির আরেক প্রার্থী লিয়াকত আলী পেয়েছিলেন ১৮ হাজার ১৩৭ ভোট।

মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘২০-দলীয় জোটের মনোনয়ন চেয়েছি। কিন্তু পাইনি। তাই স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

২০-দলীয় জোটের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে বিএনপির জাফরুল ইসলাম চৌধুরীকে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন জামায়াতের জহিরুল ইসলাম।
জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচনে আমি অনায়াসেই জিতেছি। এমপি নির্বাচনেও আল্লাহর রহমতে জিতব। কারণ, জামায়াতের বাইরেও আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির অনেকই আমাকে ভোট দেবে। আমাদের চিন্তা, কেন্দ্র পাহারা দেওয়া নিয়ে। জনগণ কেন্দ্রে যেতে পারলে আমার জয় কেউ ঠেকাতে পারবে না।’

জোট প্রার্থী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী ১৯৯৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত চারটি নির্বাচনে একটানা বিএনপির সাংসদ হয়েছিলেন।
জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জামায়াত জোটের সঙ্গে আছে। বাঁশখালীতে আমি জোটের প্রার্থী। সারা দেশে বিএনপি-জামায়াত যেখানে ঐক্যবদ্ধ সেখানে বাঁশখালীতে বিভাজন হওয়ার সুযোগ কোথায়?’
জাফরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘জোটের শীর্ষ নীতিনির্ধারকেরা বিষয়টি সমাধান করবেন। বাঁশখালীতে আমাদের একজনই প্রার্থী থাকবেন বলে আশা করছি। কারণ, সুখে-দুঃখে আমরা সবাই একসঙ্গে ছিলাম এবং আছি।’
সর্বশেষ ২০০৮ সালের নির্বাচনে জাফরুল ইসলাম চৌধুরী আওয়ামী লীগের সুলতানুল কবির চৌধুরীকে হারিয়ে সাংসদ হন। ওই নির্বাচনে জাফরুল ইসলাম পেয়েছিলেন ৯৯ হাজার ৮৯৬ ভোট। আর আওয়ামী লীগের সুলতানুল কবির পেয়েছিলেন ৯১ হাজার ৮৭০ ভোট।

ব্রেকিং নিউজ :
Shares