কাবা শরীফের কালো পাথরের রহস্যময় ইতিহাস ও তার বৈশিষ্ট্য।


rafiq প্রকাশের সময় : মে ৬, ২০২১, ১৩:১২ / ৬৯৩
কাবা শরীফের কালো পাথরের রহস্যময় ইতিহাস ও তার বৈশিষ্ট্য।

কাবা শরীফের কালো পাথরের রহস্যময় ইতিহাস ও ছবি।সৌদি সরকার প্রকাশ করেছে।

বিডি সংবাদ একাত্তর ডেস্ক ঃ কোভিডের সময় পাথরের কাছে ভিড় নেই, সেই সুযোগে সৌদি সরকারের দুই পবিত্র মসজিদের জেনারেল প্রেসিডেন্সির ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ আল-হাজর আল-আসওয়াদ বা ব্ল্যাক স্টোনের ছবি নিয়েছে ৭ ঘন্টা ধরে। ১,০৫০ টি ছবি তোলা হয়েছে প্রতিটি ছবি ছিল ১৬০ গেগাবাইটের এবং অবিশ্বাস্য ৪৯,০০০ মেগাপিক্সেলের।

তারপর ৫০ ঘন্টা লেগেছে ফোকাস স্ট্যাকিং নামে একটি কৌশল ব্যবহার করে সমাপ্ত ছবিগুলি শার্প করতে। বিভিন্ন ফোকাস পয়েন্টের সাথে একাধিক ফটো একত্রিত করে, ডিজিটাল ফটোগ্রাফিতে ফোকাস স্ট্যাকিং করা হয়।

গত সোমবার ৪মে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সৌদি তথ্য মন্ত্রণালয় এই ছবিগুলি প্রকাশ করে। এখন যে কেউ প্রথমবারের মতো একটি বর্ধিত ডিজিটাল ফটোতে পাথরটিকে অতি নিকটে এবং ব্যক্তিগতভাবে দেখতে পাবেন।

ওমর (রা) বলেন, “আমি স্পষ্টই জানি যে তুমি একটি পাথর মাত্র। তুমি আমাদের ভালো মন্দের, লাভ লোকসানের মালিক নও। বিশ্বনবী (সা)কে চুম্বন দিতে না দেখলে আমি তোমায় চুম্বন দিতাম না” (বুখারী)।

সেই সময় থেকে কাবা শরীফ তওয়াফ করতে গেলে আল-হাজার আল আসওয়াদে স্পর্শ, চুম্বন বা হাত নাড়িয়ে ইশারা করা হয়।

কালো পাথর চুম্বনের তাৎপর্য হচ্ছে-একই পাথরে একই স্থানে জাতি ভেদ নির্বিশেষে লাখ লাখ হাজী শুধু আল্লাহর বান্দা হিসাবে একত্রিত হয়ে সবার ঠোঁট মুখ, হাত–এক ঠোঁট, মুখ, হাত হয়ে যায়। একজনের চুম্বনের জায়গায় অন্যজন বারবার চুম্বন দিতে ঘৃণা করে না, অস্বীকার করে না, বরঞ্চ কুস্তীর মতো ঠেলে ঠুলে চুমু দিতে যায় প্রতিদিন প্রচন্ড ভিড়ের মধ্যে।

ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃ) বলেন, “হাজরে আসওয়াদ নামে কাল পাথরটি জান্নাত থেকে আসে, এটা দুধের চেয়েও সাদা ছিল, কিন্তু আদম সন্তানের পাপ এটাকে কাল করেছে”।
তিরমিজি ৮৭৭, সুনানে আহমদ ২৭৯২, ইবনে খুজায়মা হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন ৪/২১৯)।

৭৫৬ সালে হজরত আবদুল্লাহ বিন জোবায়েরের শাসনামলে কাবা শরিফে আগুন লাগলে হাজরে আসওয়াদ তিন টুকরা হয়ে যায়। তিনি ভাঙা টুকরাগুলো রুপার ফ্রেমে বাঁধিয়ে দেন।

শিয়াদের ইতিহাসে বলা হয় ৯৩০ সালে বাহরাইনের কারমাতিয়ান রাজা আবু তাহের পাথরটি জবরদস্তী আল দিরার মসজিদে নিয়ে গেলে আব্বাসীয় নেতারা বিপুল টাকার বিনিময়ে পাথরটি ৯৫২ সালে মক্কায় ফিরিয়ে আনেন। তখন নাকি আটটি টুকরো পাওয়া গিয়েছিলো।

এখন হাই রিজলিউশন ক্যামেরার ছবি এসেছে। ভবিষ্যতে দুই মসজিদের প্রেসিডেন্সী আরো সুযোগ দিলে আরো অনেক বৈজ্ঞানিক তথ্য পাওয়া যাবে।

নবী (স) বলেছেন এটি জান্নাতের পাথর।কালো পাথরটি জান্নাত থেকে অবতীর্ণ হয়েছে।

নবী করিম (সাঃ) কাবার দক্ষিণ-পূর্ব কোণে স্থাপন করেছিলেন। ব্ল্যাক স্টোনটিতে একটি বড় পাথরের সাথে আটটি ছোট ছোট শিলা রয়েছে যা রূপোর ফ্রেমে আবদ্ধ।

ব্ল্যাক স্টোন এমন বিন্দু চিহ্নিত করে যেখান থেকে প্রদক্ষিণ (তাওয়াফ) শুরু হয়ে শেষ হয়। তাওয়াফের আনুষ্ঠানিকতায় হজ ও ওমরাহ হজযাত্রীরা কাবার কাছাকাছি সাতবার বিচ্ছিন্নভাবে জড়িত থাকে।

ব্ল্যাক স্টোনটি মাটি থেকে দেড় মিটার উঁচুতে স্থাপন করা হয়েছে এবং এটি একটি বাটির মতো গহ্বরযুক্ত লালচে বর্ণের সাথে কালো রঙের।

ব্ল্যাক স্টোনটি সংরক্ষণের জন্য খাঁটি রৌপ্য একটি ফ্রেম দ্বারা বেষ্টিত ছিল এবং পাথরের জায়গাটি ডিম্বাকৃতি প্রদর্শিত হবে। দিনে পাঁচবার বিলাসবহুল ওড তেল দিয়ে ব্ল্যাক স্টোন সুগন্ধযুক্ত হয়।

ব্রেকিং নিউজ :
Shares