কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের কাজের মাধ্যমে আজ আমরা একটি নতুন ধাপে প্রবেশ করলাম। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ এর খনন কাজ উদ্ভবোধন কালে, প্রধানমন্ত্রী ,


rafiq প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারী ২৫, ২০১৯, ০৪:১৮ / ২২২
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের কাজের মাধ্যমে আজ আমরা একটি নতুন ধাপে প্রবেশ করলাম। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ এর খনন কাজ উদ্ভবোধন কালে, প্রধানমন্ত্রী ,

বিশেষ সংবাদ দাতা উন্নয়নের ধাপে ধাপে এগিয়ে গিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশ একটা সম্মানজনক অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের কাজের মাধ্যমে আজ আমরা একটি নতুন ধাপে প্রবেশ করলাম। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় এত বড় একটি নদীর তলদেশ দিয়ে প্রথম টানেল বাংলাদেশে নির্মাণ করা হচ্ছে। ২০১০ সালে চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলাম।’ গতকাল রবিবার ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ এর বোরিং কার্যক্রম এবং এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজের উদ্বোধন শেষে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে এক সুধী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একথা বলেন।

এর আগে দুটি প্রকল্পের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন ও সুধী সমাবেশে যোগ দিতে সকাল পৌনে ১১ টায় ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। প্রকল্প দুটি উদ্বোধনের পর মোনাজাত ও দোয়ায় অংশ নেন তিনি।
টালেন নির্মাণ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘চীন সফরে গেলে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমার আলাপ হয়। আলোচনার পর ওইদিনই আমরা চুক্তিতে সই করি। চীন সরকার সাধারণত ঋণের ৮৫ ভাগ দিয়ে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য শতভাগ ঋণ সহায়তা দিয়েছে চীন সরকার। আমাদের আগ্রহ দেখে চীনের প্রধানমন্ত্রী এ সহযোগিতা দিয়েছেন। চীনের প্রেসিডেন্টও বেশ সহযোগিতা করেছেন। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর যখন এই টানেল নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চীনের প্রেসিডেন্ট উপস্থিত ছিলেন। তিনিও বাংলাদেশের উন্নতির জন্য সার্বিক সহযোগিতা করেছেন। চীনের প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতিকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
টানেলের সুবিধা সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে মূল টানেলটি দুটি টিউব সম্বলিত ৩.৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং টানেলের পশ্চিম ও পূর্বপ্রান্তে ৫.৩৫ কিলোমিটার এপ্রোচ রোড এবং ২২৭ মিটার ওভার ব্রিজসহ এই টানেল চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলাকে শহর অঞ্চলের সাথে সংযুক্ত করবে। যেহেতু এই টানেল আনোয়ারার সাথে যুক্ত হচ্ছে, আনোয়ারা থেকে পটিয়া পর্যন্ত এবং পটিয়া থেকে কক্সবাজার যে চার লেনের রাস্তা রয়েছে, সে রাস্তা পর্যন্ত সংযোগ রাস্তাও আমরা করে দেবো। আরো ১০ কিলোমিটার যদি রাস্তা করা যায় তাহলে এই সংযোগ হয়ে যাবে। কক্সবাজারের আগ পর্যন্ত যে রাস্তাটি রয়েছে তা ছোট এবং আঁকাবাঁকা। এই রাস্তাকেও আমরা চার লেনের করে দেবো। এব্যাপারে আমি ইতোমধ্যে সচিবের সাথে কথা বলেছি। এই টানেল হয়ে আনোয়ারা যাওয়া যাবে এবং আনোয়ারা থেকে চার লেন দিয়ে খুব সহজে কক্সবাজার যেতে পারবেন আপনারা।
পদ্মা সেতুর দুর্নীতি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর আমরা পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি এবং প্রথম দিকে বিশ^ ব্যাংক এ ব্যাপারে অনেক আগ্রহ দেখিয়েছে। পরে মিথ্যা এক অভিযোগ আনে, এখানে নাকি দুর্নীতি হয়েছে। আমি তাদের চ্যালেঞ্জ করেছি, দুর্নীতি হলে প্রমাণ দেন। মামলায় বিশ্বব্যাংক কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি। বিশ্বব্যাংক যা যা বলেছে সব ভুয়া, বানোয়াট। এটা নিয়ে কত যে মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়েছে তা আপনারা বুঝবেন না।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই পদ্মা সেতুর নির্মাণের কাজ বন্ধ করার জন্য চট্টগ্রামের নোবেল বিজয়ী এবং একটি জাতীয় পত্রিকার সম্পাদক অনেক ষড়যন্ত্র করেছেন। কিন্তু তারা সফল হতে পারেনি। আল্লাহর রহমতে আজ পদ্মা সেতু দৃশ্যমান। আমরা নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করতে পেরেছি।’
চট্টগ্রামের উন্নয়ন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামে প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আওয়ামী লীগ সরকার করে দিয়েছে। আরেকটি কাজ করে দিচ্ছি লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। এটি পোর্ট সিটি হওয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্য সব কিছু এ জায়গা থেকে হয়। চট্টগ্রামে বিশাল আকারে অর্থনৈতিক অঞ্চল হচ্ছে। শহরে যানজট কমানোর জন্য বাইপাস করে দিচ্ছি। টানেল নির্মাণ হলে চট্টগ্রামে যোগাযোগ, ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পায়ন হবে।
সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, মিরসরাই থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ সড়কের চিন্তাভাবনা চলছে। কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভের কাজ শেষ করার পেছনে শেখ হাসিনার অবদান রয়েছে। সড়কটি না হলে রোহিঙ্গাদের নিয়ে দুর্দশায় পড়তাম। কক্সবাজার দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতে বিনোদনের ব্যবস্থা করা হবে। আগামী ঈদের আগে তিনটি চার লেনের সেতু দৃশ্যমান হবে। এছাড়া ভবিষ্যতে চট্টগ্রামে মেট্রোরেল করার চিন্তাভাবনা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।
সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠানে সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এবং বাংলাদেশে চিনের রাষ্ট্রদূত জ্যাং জোউ বক্তৃতা রাখেন। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী এমপি, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, রেলপথ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি এবং আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়–য়া, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, কেন্দ্রীয় সদস্য মারুফা আকতার পপি, পারভীন জামান কল্পনাসহ চট্টগ্রামের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ

ব্রেকিং নিউজ :
Shares