করোনা টেস্ট জালিয়াতির মূলহোতা সাহেদের বাবার মৃত্যুতে আসেনি ছেলে।


rafiq প্রকাশের সময় : জুলাই ১০, ২০২০, ০৪:১৩ / ৩৮৩
করোনা টেস্ট জালিয়াতির মূলহোতা সাহেদের বাবার মৃত্যুতে আসেনি ছেলে।

বিডি সংবাদ একাত্তর ডেস্কঃঃ=============  করোনা টেস্ট জালিয়াতির মূলহোত রাজধানীর রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মোহাম্মদ সাহেদের বাবা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। 

বৃহস্পতিবার রাতে মহাখালীতে অবস্থিত ইউনির্ভাসেল মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

সাহেদের বাবার নাম সিরাজুল ইসলাম। গ্রেফতারের ভয়ে পলাতক থাকা সাহেদ তার বাবাকে দেখতে যাননি।

ওই হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী গণমাধ্যমকে জানান, সিরাজুল ইসলাম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন। তিনি তাদের হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

ডা. আশীষ কুমার আরো বলেন, ‘সাহেদকে আমি বলেছিলাম, যেহেতু আপনার হাসপাতাল কোভিড ডেডিকেটেড, তাই রিজেন্টে নিয়ে যান। তখন তিনি তার হাসপাতালে কোনও সার্ভিস না থাকার কথা বলেন।’

তিনি বলেন, আমাদের কাছে মো. সাহেদের ফোন নম্বর ছাড়া আর কারো নম্বর ছিল না। এখন তার সব নম্বর বন্ধ পাচ্ছি।

এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাহেদের স্ত্রীর ফোন নম্বর যোগাড় করে মারা যাওয়ার খবর দেন। পরে দুজন ব্যক্তি এসে মৃতদেহ নিয়ে যায়। দুজনের কেউই তাদের নিকটাত্মীয় নন।

এর আগে সিরাজুলের অবস্থা গুরুতর হলে হাসপাতালে কর্তৃপক্ষ সাহেদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু যোগাযোগ করতে না পেরে তেজগাঁ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।

ভর্তির পর প্রথম দুই দিন সাহেদ তার বাবার খোঁজ নিয়েছিলেন। যেদিন রিজেন্টে র‌্যাব অভিযান চালায় সেদিন রাতেও তিনি খোঁজ নেন।

এ দিকে সাহেদের স্ত্রী সাদিয়া আরাবী সংবাদমাধ্যমকে জানান, তিন দিন আগে তার স্বামীর সঙ্গে শেষ কথা হয়েছিল। তখন তিনি ফোন করে জানিয়েছিলেন তিনি ভালো আছেন। এরপর থেকে তার আর যোগাযোগ নেই।

উল্লেখ্য, টেস্ট না করেই করোনা ভাইরাস পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট প্রদান করে আসছিল রাজধানীর রিজেন্ট হাসপাতালটি। ৬ হাজার নমুনা সংগ্রহ করে তা ল্যাবরেটরিতে না নিয়ে বালতিতে রাখা হতো। পরবর্তীতে সেগুলো বাইরে ফেলে দেওয়া হতো।

পরে ১০ থেকে ২০ ভাগ রোগীর রিপোর্ট পরীক্ষা ছাড়াই পজিটিভ ও বাকিগুলো নেগেটিভ বলে চালিয়ে দেয়। অথচ এই ৬ হাজার মানুষের প্রত্যেকের কাছ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়। এতে অনেক রোগী পড়েন মহাবিপদে। কেউ কেউ মারাও গেছেন।

এরপর ৬ জুলাই র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের নেতৃত্বে রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়।

এর একদিন পর ৭ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশে র‌্যাব রিজেন্ট হাসপাতাল ও তার মূল কার্যালয় সিলগালা করে দেয়।

র‍্যাব সদর দফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম বলেন, রিজেন্ট হাসপাতালের হেড অফিসে বসেই মিথ্যা রিপোর্ট তৈরি করত তারা। হেড অফিসে পাঁচ-সাত দিনের স্যাম্পল এক সঙ্গে করে ফেলে দিত।

রিজেন্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। একটি প্রতারণা ও অন্যটি মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে। মামলায় রিজেন্ট হাসপাতাল ও গ্রুপের মালিক সাহেদ ও এমডিসহ ১৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। তবে সাহেদ এখনো পলাতক রয়েছেন।

অভিযোগ আছে প্রভাবশালীদের সঙ্গে ছবি তুলে তা ব্যবহার করে অপকর্ম করতেন সাহেদ। নিয়ম না থাকলেও ফ্লাগস্ট্যান্ডের গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন। টেলিভিশন টকশোতে প্রায়ই হাজির হতেন সাহেদ

ব্রেকিং নিউজ :
Shares