কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন,আওয়ামীলীগ, বিএনপি,জাসাস, সহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ। 


rafiq প্রকাশের সময় : অগাস্ট ২৮, ২০২১, ০৯:১৮ / ২৭১
কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন,আওয়ামীলীগ, বিএনপি,জাসাস, সহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ। 

কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন,আওয়ামীলীগ,
বিএনপি,জাসাস, সহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ।

রফিক চৌধুরী বিডি সংবাদ ৭১ ঃযথাযোগ্য মর্যাদা আর ফুলেল শ্রদ্ধায় পালিত হলো জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। দিবসটি উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সব শ্রেণি-পেশার মানুষ।

সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে কবি পরিবারের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন কবির নাতনি খিলখিল কাজী। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তারা কবির আত্মার শান্তি কামনায় মোনাজাতে অংশ নেন।

flashsgl

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সকাল নয়টায় শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এসময় তার সাথে ছিলেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, সাংগাঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক প্রমূখ।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নজরুলের সাম্প্রদায়িক চেতনা চিরদিন বাঙালির অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার যে বিষবৃক্ষ এখনও ডালপালা বিস্তার করে যাচ্ছে, সেই বিষবৃক্ষকে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমূলে উৎপাটিত করতে হবে।’
পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। এসময় তিনি বলেন, কবি নজরুল এখনো প্রাসঙ্গিক আছেন এবং ভবিষ্যতেও প্রাসঙ্গিক থাকবেন। তাঁর বিদ্রোহী কবিতা স্বাধীনতা যুদ্ধেও যেমন মানুষকে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে।

বিএনপির পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি বলেন, অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা-গান আমাদের সব সময় অনুপ্রাণিত করে। আজকে গণতন্ত্রের ঘাটতির যুগে, কথা বলার স্বাধীনতা চর্চার কারণে নির্যাতন নিপীড়নের এই যুগে এবং সর্বোপরি চারদিকে একটা ভয় ও অন্ধকারের যুগে আমাদের জাগিয়ে তোলে কাজী নজরুল ইসলামের লেখনী। এই সময় আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা বিষয় সম্পাদক ডঃ ওবায়দুল জাসাস এর সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোশাররফ আহমেদ ঠাকুর

জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দের কবির সমাধিতে ফুল দিয়ে সম্মান জানান নেতৃবৃন্দ।  এই সময় সহসভাপতি  আহসান উল্লাহ চৌধুরী বলেন বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলাম এর কবিতা  ছিল জুলুম নির্যাতন ও শৈরচার এর বিরুদ্ধে  গনতন্ত্রের পক্ষে, আজ সেই  শক্তিতে বলিয়ান হয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়া কে মুক্ত করে আনবো ইনশাআল্লাহ। তার আগে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।কে নিয়ে কবির সমাধি তে  ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।এবং সাথে  আরও ছিলেন কেন্দ্রীয় জাসাস এর শাহরিয়ার ইসলাম শায়লা , আরিফুর রহমান মোল্লা সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন রোকন, দফতর সম্পাদক শাহ মোঃ বিল্লাল হোসেন। চট্টগ্রাম মহানগর জাসাস এর সহসভাপতি রফিক চৌধুরী, সহ কেন্দ্রীয় জাসাস এর  অসংখ্য নেতৃবৃন্দ।

উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এসময় উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল, ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল, বাংলা একাডেমি, আওয়ামী যুবলীগ, ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, কবি নজরুল ইনস্টিটিউট, জাসদ, নজরুল চর্চা কেন্দ্র-বাঁশরী, কৃষকলীগ, বাসদ এবং চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ কবির প্রতি থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

এদিকে, প্রেম আর দ্রোহের কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ভার্চুয়াল আলোচনা সভার আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট নজরুল বিশেষজ্ঞ জাতীয় অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম।

সভায় জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতার পর আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে বঙ্গবন্ধুর সাথে দেখা করে তাকে বলেছিলাম, আপনি নজরুলকে বাংলাদেশে নিয়ে আসুন। তিনি কলকাতায় অত্যন্ত দুরাবস্থায় আছেন। বঙ্গবন্ধু সঙ্গে সঙ্গে ইন্দিরা গান্ধীকে ফোন করেন এবং তিনি সম্মতি প্রদান করেন। ফলে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম নজরুল জয়ন্তী উদযাপনের আগে তাকে নিয়ে আসা হয়। ধানমন্ডিতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে স্থাপন করা হয়। এটা বঙ্গবন্ধুর কৃতিত্ব।

এবছর নজরুল-রচিত ‘বিদ্রোহী’ কবিতার শতবর্ষপূর্তি হতে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নজরুলের বিদ্রোহী কবিতার মাধ্যমে বাংলা কবিতার মোড় পরিবর্তন ঘটে। যতদিন বাংলা ভাষা ও সাহিত্য থাকবে ততদিন কবি নজরুল তাঁর বিদ্রোহী কবিতার জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সৃষ্টিকর্ম বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ উল্লেখ করে বলেছেন, তিনি আমাদের অফুরান প্রেরণার উৎস। সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে তাঁর প্রাসঙ্গিকতা সবসময় রয়েছে। অসাম্প্রদায়িক, মানবিক, সাম্য ও প্রেমের কবি কাজী নজরুলের দর্শন ও চেতনা সব শ্রেণির মানুষকে সর্বদা অনুপ্রাণিত করে। তাই তাঁর চেতনা ও দর্শন চিরঞ্জীব ও চির অম্লান।
সভায় উপ-উপাচার্য(প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, নজরুল গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর দে, ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া বক্তব্য রাখেন। আলোচনা সভা সঞ্চালনা ও সূচনা বক্তব্য রাখেন বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সৈয়দ আজিজুল হক। দিবসটি উপলক্ষ্যে বাদ ফজর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদুল জামিয়া’য় কোরানখানি অনুষ্ঠিত হয়।

ব্রেকিং নিউজ :
Shares