আমরা নতুন নতুন কোচ কিনলাম ইঞ্জিন কিনলাম,আর বিএনপি শুরু করল অগ্নি–সন্ত্রাস, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


rafiq প্রকাশের সময় : মে ১, ২০২২, ১৬:০৯ / ২২২
আমরা নতুন নতুন কোচ কিনলাম ইঞ্জিন কিনলাম,আর বিএনপি শুরু করল অগ্নি–সন্ত্রাস, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিডি সংবাদ একাত্তর ডেস্ক ঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার যোগাযোগ ও পরিবহনব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে আরও সচল ও গতিশীল করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী আজ বুধবার সকালে মুজিব বর্ষ উপলক্ষে একটি ব্রডগেজ ও একটি মিটারগেজ কোচে নির্মিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর’ এবং উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সংগৃহীত ৩০টি মিটারগেজ ও ১৬টি ব্রডগেজ লোকামেটিভের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন। তিনি তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর কমলাপুরে বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং রেলপথ মন্ত্রণালয় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা দেশের জনগণের সর্বত্র চলাচলের জন্য যোগাযোগব্যবস্থাকে সহজ করার মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে আরও ত্বরান্বিত করার পদক্ষেপ নিচ্ছি।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যন্ত ব্রডব্যান্ড চালু হয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ মহাকাশে আমরা উৎক্ষেপণ করেছি, যার ফলে অনলাইনে কেনাবেচা ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি সবকিছুই আমরা করতে পারছি। অর্থাৎ প্রযুক্তির মাধ্যমেও আমাদের যোগাযোগ আজ উন্নত হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারের সবকিছুই যে লাভজনক হবে, তা কিন্তু নয়। তবে লাভজনক করা যায়। আমরা বিআরটিসিকেও যেমন লাভজনক করেছি, তেমনি বিএনপির বন্ধ করে দেওয়া রেলকে চালু করে এখানেও প্রমাণ করেছি, এটাকেও লাভজনক করা যেতে পারে।’

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন এই রেল ও বিআরটিসি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। যেখানে পরামর্শদাতা ছিল ওয়ার্ল্ড ব্যাংক। গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে রেলের ১০ হাজার কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা হয়। অনেক রেললাইন বন্ধ করে দেওয়া হয়। রেল আসলে মুখ থুবড়ে পড়ে।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকেই নতুনভাবে এই রেলকে গড়ে তুলে স্বল্পব্যয়ের এই বৃহৎ গণযোগাযোগ ব্যবস্থাকে সচল করার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে বলে উল্লেখ করেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, দ্বিতীয়বার সরকারে এসেই রেলের জন্য পৃথক বাজেট বরাদ্দের মাধ্যমে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচি হাতে নিতে তাঁর সরকার পৃথক মন্ত্রণালয়ও করে দেয়। তাঁর সরকার বিআরটিসি ও বাংলাদেশ রেলওয়েকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে।

বরিশাল ও পটুয়াখালীর পায়রা বন্দর পর্যন্ত সরকার রেলপথ সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু পার হয়ে ভাঙ্গা থেকে একদিকে যেমন যশোর হয়ে খুলনা পর্যন্ত যোগাযোগ স্থাপন করা হবে, অপর দিকে সোজা বরিশাল হয়ে একেবারে পায়রা নতুন নৌবন্দর পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। এর ফলে জলবায়ুর অভিঘাতে ঝুঁকিপূর্ণ দক্ষিণাঞ্চলের এই জেলাগুলোর যোগাযোগব্যবস্থার যেমন উন্নয়ন হবে, তেমনি বন্যার হাত থেকেও অনেকাংশে মুক্তি পাবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে এটাই আমাদের লক্ষ্য। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা আমাদের স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত করেছিলেন। আজ আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। কাজেই এই মর্যাদা ধরে রেখে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’
বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের সময় রেলে অগ্নিসংযোগের কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘মাঝে মাঝে বিপত্তি আসে, এটা হচ্ছে দুঃখজনক। যখন আমরা নতুন নতুন কোচ কিনলাম, নতুন লোকোমোটিভ কিনলাম, ইঞ্জিন কিনলাম, সেই সময় বিএনপি শুরু করল অগ্নি–সন্ত্রাস, যা সবচেয়ে দুঃখজনক।’

আসন্ন ঈদুল ফিতর সামনে রেখে ইঞ্জিনগুলো দেশবাসীর জন্য একটি উপহার বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ঈদের আগে ট্রেন চলাচল বাড়বে। নতুন এই পরিষেবাগুলো যুক্ত হওয়ার ফলে রেলসেবা আরও সুন্দর ও উন্নত হবে। ঈদ সামনে রেখে মানুষ সুন্দরভাবে ঘরে ফিরতে পারবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর নামে যেটা করা হয়েছে, আমি মনে করি, জাতির পিতার যে অবদান বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য বা বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য, সেটা আমাদের দেশের মানুষ আরও ভালোভাবে জানতে পারবে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম ও রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য দেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবীর। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর ও বাংলাদেশ রেলওয়ের রোলিং স্টকের ওপর অনুষ্ঠানে পৃথক দুটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।

সূত্র জানায়, ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘরটিতে ১৯২০ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক জীবন, স্বাধিকার আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন সংগ্রামী ঘটনা প্রবাহ তুলে ধরা হয়েছে।
ব্রডগেজ কোচের জাদুঘরটি পশ্চিমাঞ্চল ও মিটার গেজের জাদুঘরটি পূর্বাঞ্চলে ঈদের পরে প্রদর্শন করা হবে। শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের মানুষের জন্য তা উন্মুক্ত থাকবে।

ব্রেকিং নিউজ :
Shares