মুসলিম উম্মার পবিত্র হজ্জের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সৌদি সরকার, হাজীদের ৫ কর্মদিবসে ফরজ,ওয়াজিব মিলে ৯,কাজ,
rafiq
প্রকাশের সময় : জুন ১১, ২০২৪, ১০:০১ /
০
মুসলিম উম্মার পবিত্র হজ্জের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সৌদি সরকার, হাজীদের ৫ কর্মদিবসে ফরজ,ওয়াজিব মিলে ৯,কাজ,
রফিক চৌধুরী বিডি সংবাদ একাত্তর , সৌদি আরব প্রতিনিধি
মুসলিম উম্মার সবচেয়ে বড় ধর্মীয়
ঐক্য ও মহাসম্মেলনে সম্মেলিত হয় পবিত্র আরাফাত ময়দানে, এটি ইসলামের চতুর্থ স্তম্ভ পবিত্র হজ। আল্লাহ ও তার রাসুলের সান্নিধ্য অর্জনে প্রতিবছর গোটা পৃথিবী থেকে প্রিয় নবীর দেশে হজ পালনে আসেন লাখো ধর্মপ্রাণ মুসলমান। এবার বাদশা সালমান বিন আব্দুল আজিজ যুদ্ধ বিদ্ধস্ত ফিলিস্তিনের একহাজার হাজীকে রাস্ট্রীয় অতিথি হিসাবে হজ্জ পালন করার সুযোগ দিয়েছেন
এই জন্য সৌদি সরকার এর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রানালয় গুলো রাত দিন কাজ করে যাচ্ছেন আল্লাহর মেহমানদের অকৃত্রিম সেবা ও নিরাপত্তার জন্য।
তার ধারাবাহিকতায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং সুপ্রিম হজ কমিটির চেয়ারম্যান প্রিন্স আবদুল আজিজ বিন সৌদ বিন নায়েফ হজ নিরাপত্তা বাহিনীর বার্ষিক সামরিক কুচকাওয়াজে অংশ নেন
সোমবার মক্কায় অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে মদিনার আমির প্রিন্স সালমান বিন সুলতান, মক্কা অঞ্চলের ডেপুটি আমির প্রিন্স সুলতান বিন মিশাল এবং নিরাপত্তা বাহিনীর কমান্ডারদের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
কুচকাওয়াজ এই বছরের হজ নিরাপত্তা মিশনে অংশগ্রহণকারী নিরাপত্তা সেক্টরগুলির প্রস্তুতি প্রদর্শন করে যাতে তারা আল্লাহর মেহমানদের জন্য সর্বোচ্চ স্তরের নিরাপত্তা এবং নিরাপত্তা প্রদান করে যাতে তারা স্বাচ্ছন্দ্য ও স্বাচ্ছন্দ্যে হজের আনুষ্ঠানিকতা পালন করতে সক্ষম হব বলে দৃঢ়প্রত্যয় ব্যাক্ত করেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জননিরাপত্তা বিভাগের পরিচালক ও হজ নিরাপত্তা কমিটির চেয়ারম্যান লে.মোহাম্মদ আল-বাসামি
ইতি মধ্যে ভুয়া হজ্জ পারমিট ইসু করাই পাকিস্তানি ও বার্মার নাগরিক সহ বেশ কয়েকজন কে আটক করেছে ইন্টেলিজেন্ট ব্রান্স,এছাড়া কয়েক হাজার অবৈধভাবে মক্কায় প্রবেশ করাই তাদের ফেরত দিয়েছে স্থানীয় পুলিশ এবং অনেক কে গ্রেফতার ও করা হয়েছে
প্রতিবারের মতো এবার ও পবিত্র হজ্জের খোদবা বাংলা সহ ১৮ টি ভাষায় অনুবাদ করা হবে।
ইতিমধ্যে সারাপৃথীবীর হাজী সাহেব গন পবিত্র মক্কায় সমবেত হয়েছেন, বাংলাদেশ থেকে
৮৫ হাজার ২শ ৫৭ জন হজ্জ যাত্রী যাবেন এবং এবার বহির্বিশ্ব ও স্থাতানীয় মিলে ৩০ লাখ হাজীর সমাগম হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই পযন্ত সারাবিশ্বের হাজীরা মক্কায় সমবেত হচ্ছেন, এবং
,মদিনা থেকে অসুস্থ হাজীদের বিশেষ এম্বুলেন্সে করে পবিত্র মক্কায় নিয়ে আসা হচ্চে,সর্বশেষ পাওয়া খবরে এই পযন্ত ১২ জন বাংলাদেশী হাজী মৃত্যু বরন করেছে।
এবার মুল হজ্জের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে ৮ই জিলহজ্জ ২০২৪, ১৪ ই জুন শুক্রবার থেকে,
হজের ৫ দিনের ধারাবাহিক ৮ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ পর্যন্ত চলবে হজের কার্যক্রম ও আনুষ্ঠানিকতা।
হজের ৫ দিনের করণীয়গুলো ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরা হলো-
৮ জিলহজ, হজের ইহরাম পড়ে মক্কার হারাম শরিফ অথবা বাসা-হোটেল থেকে হজের নিয়তে ইহরাম বেঁধে মিনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়া এবং জোহরের নামাজের আগেই মিনায় পৌঁছা। এখন অবশ্য ৭ তারিখে রাত থেকেই হাজিদের মিনায় নেওয়ার কাজ শুরু হয়।
মিনায় অবস্থান: মিনায় ৮ জিলহজ জোহর থেকে ৯ জিলহজ ফজর পর্যন্ত ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা মুস্তাহাব এবং সেখানে অবস্থান করা সুন্নত।
৯ জিলহজ, আরাফাতের ময়দানে অবস্থান।
৯ জিলহজ আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত হওয়ার মাধ্যমে পালিত হবে পবিত্র হজ। নবী করিস সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আরাফাই হজ।’ তাই ৯ জিলহজ ফজরের পর সম্ভব হলে মিনায় গোসল করে নেওয়া অথবা অজু করে সকাল সকাল আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়া।
৯ জিলহজ জোহরের আগেই হজের অন্যতম রোকন পালনে আরাফাতের ময়দানে গিয়ে উপস্থিত হওয়া এবং সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করা। আর এটাই হলো হজের অন্যতম রোকন। ৯ জিলহজ সকালে মিনা থেকে রওয়ানার সময় তাকবির বলা- লাব্বাঈক আল্লাহুম্মা লাব্বাঈক ইন্নাল হামদা ওয়ান্ নি’মাতা লাকা ওয়াল মূলক লা– শরিক আলাক
আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে হজের খুতবা শোনা এবং নিজ নিজ তাবুতে জোহর ও আসরের নামাজ নির্দিষ্ট সময়ে আলাদাভাবে আদায় করা। সুযোগ হলে আরাফাত ময়দানে মসজিদুল মিনারাই ঈমাম সাহেব এর সাথে জামাতে শরিক হওয়া এবং খোদবা শোনা ওয়াজিব, অথবা নিজ নিজ তাবুতে বসে তওবা-ইসতেগফার, তাকবির, তাসবিহ-তাহলিল ও মোনাজাতে কান্নাকাটিতে আত্মনিয়োগ করা এবং দোয়া কবুল এর স্তান হচ্ছে পবিত্র আরাফাত ময়দান
বিশেষ করে হজের খুতবা মনোযোগ দিয়ে শোনা এবং তা বুঝে নিয়ে জীবনের বাকি সময় এ নসিহতের আলোকে জীবন গড়ার দীপ্ত শপথ নেওয়া।
সন্ধ্যায় মাগরিব না পড়ে মুজদালিফার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়া। মুজদালিফায় গিয়ে মাগরিব ও ইশার নামাজ এক আজানে আলাদা আলাদা ইকামতে একসঙ্গে ধারাবাহিকভাবে আদায় করা। মুজদালিফায় সারারাত খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করা। মুজদালিফায় সুবহে সাদিক পর্যন্ত থাকা সুন্নত। সুবহে-সাদিক থেকে সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত যেকোনো এক মুহূর্ত মুজদালিফায় অবস্থান করা ওয়াজিব। ফজরের নামাজ আদায় করে সূর্য উঠার কিছু আগে মিনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়া।
পাথর সংগ্রহ: মিনায় জামরাতে (শয়তানকে মারার জন্য) মুজদালিফায় অবস্থানের সময় রাতে কিংবা সকালে কংকর সংগ্রহ করা।
কংকর নিক্ষেপ: ১০ জিলহজ সকালে মুজদালিফা থেকে মিনায় এসে বড় জামরাতে ৭টি কংকর নিক্ষেপ করা। আর তা জোহরের আগেই সম্পন্ন করা। কংকর নিক্ষেপের স্থানগুলোতে বাংলায় দেওয়া দিক-নির্দেশনা মনোযোগ সহকারে শুনে তা আদায় করা।
কোরবানি করা: বড় জামরাতে কংকর নিক্ষেপ করে মিনায় কোরবানির পশু জবাই করা। এ ক্ষেত্রে যারা ব্যাংকের মাধ্যমে কোরবানি সম্পন্ন করবেন, তারা ব্যাংকের লোকদের কাছ থেকে মাথা মুণ্ডনের নির্দিষ্ট সময় জেনে নেওয়া।
মাথা মুণ্ডন করা: কোরবানির পর পরই মাথা মুণ্ডনের মাধ্যমে হজের ইহরাম থেকে হালাল হবে হাজি। মাথা মুণ্ডনের মাধ্যমে হাজি ইহরামের কাপড় পরিবর্তন করাসহ সব সাধারণ কাজ করতে পারলেও স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকতে হবে।
১১ ও ১২ জিলহজ, কংকর নিক্ষেপ ও তাওয়াফে জিয়ারত
তাওয়াফে জিয়ারত: হলো হজের সর্বশেষ রোকন তাওয়াফে জিয়ারত। যা ১১ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ সূর্য ডোবার আগ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। ১২ জিলহজ সূর্য ডোবার আগে তাওয়াফে জিয়ারত না করতে পারলে দম বা কোরবানি কাফফারা আদায় করতে হবে।
কংকর নিক্ষেপ: ১১ ও ১২ জিলহজ প্রতিদিন মিনায় অবস্থান করবে এবং ধারাবাহিকভাবে ছোট, মধ্যম ও বড় জামরাতে ৭টি করে ২১টি কংকর নিক্ষেপ করবে প্রতি দিন । তবে যদি কেউ কংকর নিক্ষেপের আগে কিংবা পরে কাবা শরিফ গিয়ে তাওয়াফে জিয়ারত আদায় করে তবে তাকে তাওয়াফের পর আবার মিনায় চলে আসতে হবে এবং মিনায় অবস্থান করতে হবে রাতে।
নারী, বৃদ্ধ ও দুর্বলদের কংকর নিক্ষেপের ক্ষেত্রে রাতের সময় বেচে নেওয়া উত্তম। তবে কংকর নিক্ষেপের ক্ষেত্রে এখন হজ কর্তৃপক্ষ সময়সূচি নির্ধারণ করে দেওয়া এবং বাংলায় দিক নির্দেশনার ব্যবস্থা করে। সে নির্দেশনা অনুযায়ী মিনায় কংকর নিক্ষেপের সময় জেনে তা পালন করলে হবে তবে ভীড় এরিয়ে চলবে,
মিনায় রাতযাপন ও ত্যাগ: ১০ থেকে ১২ জিলহজ পর্যন্ত মিনায় রাতযাপন করা এবং যারা মিনা ত্যাগ করবেন তারা ১২ তারিখ সূর্য ডোবার আগে মিনা ত্যাগ করবেন, সূর্য ডোবার আগে মিনা ত্যাগ করতে না পারলে সে রাত (১৩ জিলহজ) মিনায় অবস্থান করতে হবে
উল্লেখ্য, যদি কেউ ১২ জিলহজ সূর্য ডোবার আগে মিনা ত্যাগ করতে না পারে কিংবা থাকার ইচ্ছা করে তাকে ১৩ জিলহজ ৭টি করে আরও ২১টি কংকর নিক্ষেপ করতে হবে। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ১৩ জিলহজও মিনায় অবস্থান করেছিলেন।
বিদায়ী তাওয়াফ, সারাবিশ্ব থেকে আগত সব হজপালনকারীর জন্য দেশে রওয়ানা হওয়ার আগে তাওয়াফ করা আবশ্যক। এ তাওয়াফকে বিদায়ী তাওয়াফ বলে। তবে জিলহজ মাসের ১২ তারিখের পর যেকোনো নফল তাওয়াফই বিদায়ী তাওয়াফে হিসেবে আদায় হয়ে যায়।
আপনার মতামত লিখুন :